News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:৪০, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাজশাহীতে খানকায় হামলা, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

রাজশাহীতে খানকায় হামলা, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর পবা উপজেলায় আজিজ ভাণ্ডারীর খানকা শরিফে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা। 

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়নের পানিশাইল চন্দ্রপুকুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে আজিজুর রহমান ভাণ্ডারি বাড়ির পাশে নিজের জমিতে ওই খানকা শরিফ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ভক্তদের কাছে ‘পীর’ হিসেবেই পরিচিত। প্রতি বছর ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে এখানে তিন দিনের বিশেষ আয়োজন হয়ে থাকে। এ বছরও বৃহস্পতিবার থেকে আয়োজন শুরু হয়, যেখানে ভক্তরা গান, ভাণ্ডারি ও মুর্শিদী পরিবেশন করেন। এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।

শুক্রবার ছিল আয়োজনের প্রথম দিন। জুমার নামাজ শেষে দেড় শতাধিক লোক একত্র হয়ে খানকা শরিফে হামলা চালায়। ভক্তদের ভাষ্য অনুযায়ী, গ্রামবাসীকে উসকে দিয়ে সংগঠিত এ হামলায় পুরো খানকা ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়। 

ভক্তরা দাবি করেছেন, এসময় আজিজুর রহমান ভাণ্ডারির বাড়ি লক্ষ্য করেও ইটপাটকেল ছোঁড়া হয়। তবে ভক্তরা তাকে বাড়ি থেকে বের হতে দেননি।

আজিজুর রহমান ভাণ্ডারি অভিযোগ করেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও বিএনপির নেতা গোলাম মোস্তফা হামলার নেতৃত্ব দেন। তার সঙ্গে জামায়াতের কর্মীরাও ছিলেন বলে তিনি দাবি করেন।

তবে গোলাম মোস্তফা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হামলার সময় আমি ছিলাম না। পরে এসে শুনেছি, এমন ঘটনা ঘটেছে।

আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে কবর থেকে নুরাল পাগলের মরদেহ তুলে আগুন

এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতের আমির আযম আলী বলেন, আমাদের লোকজনের সময় নাই, ওরা কেন যাবে খানকা ভাঙতে! নিজেদের কাজই শেষ করতে পারছি না।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী হোসেন বলেন, গোলাম মোস্তফা বিএনপির পুরোনো কর্মী। তিনি এমন ঘটনায় জড়িত কি না, আমার জানা নেই।

হামলার সময় সেখানে পবা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম (কিছু প্রতিবেদনে মুনিরুল ইসলাম) পুলিশের একটি দল নিয়ে উপস্থিত ছিলেন। 

খানকার পীর আজিজুল ইসলাম ও ভক্তরা অভিযোগ করেন, গোয়েন্দা সংস্থার সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং পুলিশের উপস্থিতিতেই হামলাকারীরা খানকা গুঁড়িয়ে দেয়।

আজিজুর রহমান ভাণ্ডারি বলেন, পুলিশ ছিল, ডিবি ছিল, ওসি নিজেই ছিলেন। সেখানেও তাঁরা রক্ষা করেননি। তাহলে অভিযোগ করব কার কাছে?

এ বিষয়ে ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, খানকার বিষয়ে থানায় অনেক মানুষ এসেছিল। আমি সবাইকে শান্ত থাকতে বলেছিলাম। তারপরও উৎকণ্ঠা থাকায় পুলিশ গিয়েছিল। পুলিশ একটু দূরে ছিল, তখনই উত্তেজিত জনতা হামলা চালায়। সেখানে তিন থেকে চারশো মানুষ একসঙ্গে আক্রমণ করেছে, আর আমরা ছিলাম মাত্র পাঁচজন। অল্প কয়েকজন পুলিশ দিয়ে এমন ভিড় সামলানো সম্ভব ছিল না।

তিনি আরও বলেন, এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজিজুর রহমান ভাণ্ডারি জানিয়েছেন, তিনি থানায় কোনো অভিযোগ করবেন না। 

তার বক্তব্য, যারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকেও রক্ষা করেননি, তাঁদের কাছেই আবার অভিযোগ দেব কেন?

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়