News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:০৯, ২৯ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ১৮:৫১, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

লালমনিরহাটে ঐতিহাসিক সিন্দুরমতি মেলা

লালমনিরহাটে ঐতিহাসিক সিন্দুরমতি মেলা

লালমনিরহাট: লালমনিরহাট সদর উপজেলার সিন্দুরমতি গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহাসিক সিন্দুরমতি মেলা।

শনিবার থেকে শুরু হওয়া দুদিন ব্যাপী এ ঐতিহাসিক মেলায় দেশ-বিদেশের হাজার হাজার হিন্দু পূণ্যার্থী এসেছেন মেলা উদযাপনে।

রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে এ মেলা। সিন্দুরমতি পুকুরে স্নান করে পুজা অর্চনা করে পূণ্যার্থীরা ভগবানের আরাধনা করেন।

তিনশ বছর ধরে সিন্দুরমতি পুকুরপাড়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহাসিক এ ধর্মীয় মেলা। মেলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি ছিল মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের উপচে পড়া ভিড়।

প্রতিবেশী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার নাচিনা গ্রাম থেকে আসা পূণ্যার্থী জগন্নাথ চন্দ্র দাস (৬৫) জানান,“এবছর তারা সুন্দর পরিবেশে নির্ভেজালভাবে ধর্মীয় মেলায় সানন্দে ঘোরাফেরা করেছেন আর কেনাবাটাও করেছেন।”

 
ভারত থেকে আসা অপর পূণ্যার্থ সাবিত্রী রাণী (৬০) জানান, “তিনি প্রকিবছরই সিন্দুরমতি মেলায় আসেন ধর্মীয় রীতি পালন করতে। কিন্তু অতীতের সকল সময়ের চেয়ে এবছরই মেলার পরিবেশ অনুকুল পেয়েছেন আর এমন পরিবেশ সত্যিই পুর্ন্যার্থীদের বিমোহিত করেছে।”

শরৎ চন্দ্র বর্মন (৭২) জানান, “তিনি শৈশব থেকেই সিন্দুরমতি মেলায় আসছেন। তিনি তার স্বর্গীয় ঠাকুরদা মনোরঞ্জনের কাছে সিন্দুরমতি মেলার অনেক গল্প শুনেছিলেন।”

 
সিন্দুরমতি মন্দির কমিটির সদস্য অম্বিকাচরণ রায় জানান, “পুলিশের ঐকান্তিক চেষ্টা আর কঠোর হস্তক্ষেপের কারণে এবছর সিন্দুরমতি মেলা জুয়া আর গান মুক্ত ছিল।”

জানা যায়, তিনশ বছর আগে ওই গ্রামে এক ব্রাহ্মণের দুই কন্যা ছিল আর তাদের নাম ছিল সিন্দুর ও মতি। ওই সময় লোকজন আকস্মিকভাবে পানীয় জলের তীব্র সঙ্কটে পড়লে ব্রাহ্মণকে দৈবিক স্বপ্ন দেওয়া হয় আর এতে দিতে হয় তার দুই মেয়ে সিন্দুর ও মতি’র আত্মদান। দৈবিকভাবে একরাতেই সিন্দুরমতি পুকুরটি খনন হয় আর ওই পুকুরে জলে স্নান করতে গিয়ে ব্রাহ্মণ কন্যাদ্বয় সিন্দুর ও মতি অদৃশ্য হয়ে যায়।তারপর থেকেই এই গ্রামটির নাম হয় সিন্দুরমতি আর পুকুরটিকেও সিন্দুরমতি নামে অভিহিত করা হয়।”

প্রতিবছর  চৈত্র অথবা বৈশাখের শুরুতেই আয়োজনা করা হয় সিন্দুরমতি মেলা।

লালমনিরহাট পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম জানান, “পূণ্যার্থী আর দর্শনার্থীদের নির্বিঘ্নে মেলা উদযাপন করতে পুলিশ সকল ধরনের জুয়া ও যাত্রা সার্কাসের নামে নগ্ন নৃত্যের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।”

নিউজবাংলাদেশ.কম/কেজেএইচ

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়