News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২২:০৭, ২২ অক্টোবর ২০২৫

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াত

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াত

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চলতি বছরের নভেম্বরে গণভোট আয়োজনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

বুধবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ইতিমধ্যে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে। এখন জরুরি বিষয় হলো সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করা। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, সনদের সাংবিধানিক রূপ দিতে হলে এটি বিশেষ আদেশ আকারে জারি করতে হবে। কারণ, অধ্যাদেশ একটি দুর্বল ভিত্তি—এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া কঠিন।

ডা. তাহের জানান, এ বিষয়ে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে আলোচনা চলছে। সবাই একমত যে এটি আদেশ আকারে জারি করে গণভোটের মাধ্যমে অনুমোদন নিতে হবে। বিএনপিও প্রথমে দ্বিমত করলেও এখন গণভোটে সম্মত হয়েছে, এজন্য আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই।

তবে বিএনপির অবস্থান নিয়ে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বিএনপি গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে করতে চায়, যা অপ্রয়োজনীয় জটিলতা তৈরি করছে। অথচ গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। গণভোট হবে জুলাই সনদের অনুমোদন ও সংস্কার রূপরেখা নির্ধারণের জন্য, আর জাতীয় নির্বাচন হবে দেশ পরিচালনার জন্য সরকার নির্বাচনের উদ্দেশ্যে।

আরও পড়ুন: বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা ছাড়া সনদে সই করা হবে না: নাহিদ

তিনি আরও বলেন, গণভোট যদি নির্বাচনের দিনেই হয়, তাহলে আইনগত জটিলতা তৈরি হবে। আমাদের মতে, নভেম্বরে গণভোট হলে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের যথেষ্ট সময় পাওয়া যাবে। দেশের কল্যাণে কিছু অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হলেও আগে গণভোট ছাড়া উপায় নেই। অতীতে ১৭ বা ২১ দিন আগেও জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের নজির রয়েছে।

জামায়াতের নায়েবে আমির আরও বলেন, ৮০টির বেশি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ১৯টিতে আমরা একমত হয়েছি। সে ভিত্তিতেই আমরা সনদে স্বাক্ষর করেছি। নোট অব ডিসেন্ট বা ভিন্নমত গণভোটের অংশ হতে পারে না।

বৈঠকে প্রশাসনে দলীয় প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন জামায়াত নেতারা। 

ডা. তাহের বলেন, প্রশাসন ও পুলিশের মধ্যে প্রায় ৭০–৮০ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী একটি নির্দিষ্ট দলের আনুগত্য করে চলেছেন। এ অবস্থায় নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে প্রশাসনে ভারসাম্য আনতে হবে। লটারি পদ্ধতিতে বদলি ও পদায়ন করা যেতে পারে।

তিনি আরও জানান, বৈঠকে কিছু উপদেষ্টার পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ তোলা হয়েছে এবং সারা দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতির বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিশেষ করে নোয়াখালীর কবিরহাটের সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে জামায়াত উদ্বেগ জানিয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্নে ডা. তাহের বলেন, এই সরকারই কার্যত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পালন করছে। তাই এ নিয়ে আলাদা কাঠামোর প্রয়োজন নেই।

বিকেল ৬টার দিকে যমুনায় প্রবেশ করা জামায়াতে ইসলামীর পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটি এম মাসুম, কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আযাদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়— প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস প্রশাসনে ভারসাম্য ও নির্বাচনী পরিবেশ বিষয়ে তাদের প্রস্তাবগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়