News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:০১, ২২ অক্টোবর ২০২৫

জ্বালানি তেল ও ই-পাসপোর্ট সরাসরি ক্রয় অনুমোদন

জ্বালানি তেল ও ই-পাসপোর্ট সরাসরি ক্রয় অনুমোদন

ছবি: সংগৃহীত

সরকার ২০২৬ সালের জন্য রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে জিটুজি পদ্ধতিতে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন’ প্রকল্পের জন্য এক কোটি ই-পাসপোর্ট কাঁচামাল এবং ৫৭ লাখ উন্নত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ই-পাসপোর্ট বুকলেট সুয়াপ সরাসরি ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (২২ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। 

বৈঠকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সভায় ২০২৫ সালের ৩৪তম অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটির সুপারিশসমূহ পর্যালোচনা করা হয়।

প্রথম প্রস্তাবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জ্বালানি তেল সরাসরি ক্রয় (জিটুজি চুক্তি) পদ্ধতিতে আমদানি করার জন্য নীতিগত অনুমোদন চায়। বৈঠকে কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে নীতিগতভাবে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করে। 

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ২০১৬ সাল থেকে জ্বালানি তেলের মোট চাহিদার ৫০ শতাংশ জিটুজি ভিত্তিতে এবং ৫০ শতাংশ উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে আমদানি করে আসছে। ২০২৬ সালের জন্য প্রস্তাবিত জিটুজি ভিত্তিক আমদানি হলো গ্যাস অয়েল ১৯ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন, জেট এ-১ ৩ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন, গ্যাসোলিন (অকটেন) ১ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন, ফার্নেস অয়েল ৩ লাখ মেট্রিক টন এবং মেরিন ফুয়েল ৩০ হাজার মেট্রিক টন, মোট ২৮ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন। বিক্রয় প্রবণতা এবং পর্যাপ্ত মজুত বিবেচনায় রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে পিপিএ ২০০৬-এর ৬৮(১) ধারা এবং পিপিআর ২০০৮-এর বিধি ৭৬(২) অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এই আমদানি প্রস্তাব করা হয়। জিটুজি ভিত্তিতে আটটি দেশের ১০টি প্রতিষ্ঠান থেকে তেল সরবরাহ করা হবে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে হবে: শওকত আজিজ রাসেল

দ্বিতীয় প্রস্তাব আসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে, যা ‘বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন’ প্রকল্পের আওতায়। প্রস্তাব অনুযায়ী ১ কোটি ই-পাসপোর্ট কাঁচামাল সংগ্রহ করা হবে, যার মধ্যে জরুরি প্রয়োজনে ৫০ লাখ কাঁচামাল বইয়ে রূপান্তর করা যাবে। 

এছাড়া ৫৭ লাখ ই-পাসপোর্ট বুকলেট সুয়াপ এবং সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ প্যাকেজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা হবে। বৈঠকে কমিটি প্রস্তাবটি নীতিগত অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করে এবং উল্লেখ করে, ই-পাসপোর্ট বিতরণ অব্যাহত রাখা এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়ানোর জন্য এই প্রকল্পটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্পটি জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের বর্তমান মজুত কাঁচামাল ব্যবহার করে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ই-পাসপোর্ট তৈরি সম্ভব। ২০২৭ সালের শুরুতে বুকলেট কাঁচামাল নিশ্চিত করতে কমপক্ষে ১২ মাস আগে চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। প্রস্তাবিত ক্রয়ের মোট খরচ হবে ১ হাজার ৬৯২ কোটি ৩২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে মূল চুক্তি কার্যকরকালে পাসপোর্ট বুকলেট ৭.৩৫৯ ইউরো এবং কাঁচামাল ৫.৯৯০ ইউরো হারে চুক্তি করা হয়েছিল। বর্তমানে প্রস্তাবিত হার বুকলেটের জন্য ৮.৫৪০ ইউরো এবং কাঁচামালের জন্য ৬.৯৮০ ইউরো। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, জটিল ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে কিনলে জটিলতা সৃষ্টি হবে। তাই সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ভেরিডোস জিএমবিএইচের কাছ থেকে কেনা যুক্তিযুক্ত হবে। বৈঠকে কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দেয়।

প্রকল্পের মূল চুক্তি কার্যকর ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এবং প্রথম সংশোধনী একনেক অনুমোদিত হয় ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকার ২০২৬ সালের জন্য জ্বালানি তেলের স্থিতিশীল সরবরাহ এবং ই-পাসপোর্ট বিতরণ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি সীমান্ত নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের দক্ষতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়