News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৮:৫২, ১ অক্টোবর ২০২৫
আপডেট: ২২:০৮, ১ অক্টোবর ২০২৫

‘ধর্ম যার যার, নিরাপত্তার অধিকার সবার’

‘ধর্ম যার যার, নিরাপত্তার অধিকার সবার’

ফাইল ছবি

শারদীয় দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী উপলক্ষ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বী নাগরিকদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 

একই সঙ্গে উৎসবকে ঘিরে কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানি বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক ও সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (১ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারেক রহমান বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। তাদের সুখ শান্তি ও কল্যাণ কামনা করি।

তিনি বলেন, আবহমানকাল ধরে দেশের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ প্রতিটি গোষ্ঠী-গোত্র-সম্প্রদায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে যার যার ধর্ম পালন করে আসছে। এটি বাংলাদেশে ঐতিহ্যগত ধর্মীয় সামাজিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির সৌন্দর্য। শরতে বাংলাদেশের চারদিকে কাশফুল ও শীতের আভাস জানান দেয় এই উৎসবের বার্তা। আর উৎসব হচ্ছে অন্ধকারের গহন থেকে আলোকের উদ্ভাসন।

তারেক রহমান হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা উৎসাহ-উদ্দীপনা সহকারে নিশ্চিন্তে নিরাপদে সারা দেশে উৎসব আনন্দ উদযাপন করুন। সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিন। আমি এবং আমার দল বিএনপি বিশ্বাস করে—‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’। ‘ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাবার অধিকার সবার।’

তিনি আরও বলেন, একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমি মনে করি, উৎসবের ভেতর দিয়েই পরিস্ফুটিত হয়ে ওঠে আমাদের বিভিন্ন ধর্ম-গোত্র-সম্প্রদায়ের মধ্যকার পারস্পরিক বন্ধুত্ব, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য এবং ভ্রাতৃত্ব। আমাদের রাষ্ট্র এবং সংবিধানে দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী, সংশয়বাদী প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা বিধানের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

বিবৃতিতে তিনি পবিত্র হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, যে ব্যক্তি রাষ্ট্রের নিরাপত্তাপ্রাপ্ত অমুসলিমকে নির্যাতন করে, তার অধিকার খর্ব করে, তাকে সাধ্যের অতিরিক্ত কাজ চাপিয়ে দেয় বা তাদের অসম্মতিতে ধন-সম্পদ হরণ করে নেয়—এ ধরনের জুলুমের বিরুদ্ধে আমাদের প্রিয় নবী (সা.) তার উম্মতদের সতর্ক করে দিয়ে বলছেন—‘কেয়ামতের দিন আমিই সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে লড়বো।

আরও পড়ুন: হিন্দু সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানালেন তারেক রহমান

তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে দেশের একজন নাগরিক হিসেবে অপর নাগরিকের নিরাপত্তা এবং সম্মান রক্ষায় যথাযথ ভূমিকা রাখবে এবং নৈতিক দায়িত্ব পালন করবে, এটিই স্বাভাবিক রীতি। উৎপীড়ন ও প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার মধ্য দিয়ে যারা সমাজকে, মানব সভ্যতাকে ধ্বংস করতে চায়, কুশাসন প্রতিষ্ঠিত করতে চায়—তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা ন্যায়সঙ্গত।

তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, শারদীয় উৎসবকে ঘিরে ফ্যাসিবাদী শাসনামলের মতো কেউ যাতে কোনোরকম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের মতো পরিস্থিতি কিংবা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার মতো কোনো অপচেষ্টা করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক এবং সজাগ থাকুন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও পৃথক এক বিবৃতিতে হিন্দু সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানান। 

তিনি বলেন, আওয়ামী পতিত সরকারের আমলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য বারবার সাম্প্রদায়িক উস্কানি, বিভিন্ন ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর দেবালয় আক্রমণ ও ভাংচুরসহ নানা অপ্রীতিকর সাজানো ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। পতনের পরেও তাদের ঘাপটি মেরে থাকা অনুচরেরা এখনো তৎপর।

তিনি জানান, অশুভ চক্রের চক্রান্ত ঠেকাতে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে পুজামন্ডপে পাহারা দিচ্ছে, যাতে শান্তি ও সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপুজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হতে পারে। তাদের প্রতিহত করতে বিএনপি অঙ্গীকারাবদ্ধ।

মির্জা ফখরুল বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের জাতীয় ঐত্যিহের অংশ। আমরা সবাই বাংলাদেশী—এটিই আমাদের গর্ব, এটিই আমাদের একমাত্র পরিচয়। এবারের শারদীয় দুর্গাপুজায় সম্প্রীতি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিকের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। অপশক্তির অশুভ তৎপরতা দুর্গাপুজার উৎসবকে যাতে কোনভাবেই বিঘ্ন ঘটাতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর পাঠানো বিবৃতিতে তারেক রহমানের শুভেচ্ছা বার্তা গণমাধ্যমে পৌঁছায়।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়