News Bangladesh

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:৪৬, ২২ নভেম্বর ২০২৫

হোয়াইট হাউজে পরস্পরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প-মামদানি

হোয়াইট হাউজে পরস্পরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প-মামদানি

ছবি: সংগৃহীত

দুজন যেভাবে তীব্র বাক্যবাণে একে অপরকে নাস্তানাবুদ করার খেলায় নেমেছিলেন, শুক্রবার (২১ নভেম্বর) মুখোমুখি হয়ে বরং পরস্পরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আর নিউ ইয়র্কের মেয়র জোহরান মামদানি। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ওভাল অফিসে শুক্রবার দু’জনই  নিউ ইয়র্ক সিটির জীবনযাত্রার ব্যয় সংকট মোকাবিলায় যৌথ আগ্রহের কথা বারবার উল্লেখ করেন। তারা হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন, এমনকি মামদানি তার বিরুদ্ধে নির্বাচনি প্রচারে করা আক্রমণাত্মক মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে ট্রাম্পকেও হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়।

গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেওয়া মামদানিকে এর আগে ‘স্বৈরাচার’ বলেছিলেন ট্রাম্প। আর বৈঠকের আগেই ট্রাম্পের মুখপাত্র মামদানির হোয়াইট হাউজে আমন্ত্রণে বিরক্ত হয়ে ‘একজন কমিউনিস্টের আগমন’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। তাই, তাদের নমনীয়তা দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিস্মিত হয়েছেন।

তবে এটি ইঙ্গিত দেয় যে দু’জনই উপলব্ধি করছেন—নিউ ইয়র্কের সংকট সমাধান তাদের রাজনৈতিক সাফল্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় অন্তত ৬৭ ফিলিস্তিনি শিশু নিহত: ইউনিসেফ

ট্রাম্পের মুখে মামদানির প্রশংসা
ব্যক্তিগত বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে দু’জনের বোঝাপড়ার ছাপ স্পষ্ট ছিল। ট্রাম্পের ডান পাশে হাত জোড় করে দাঁড়ান মামদানি, আর ট্রাম্প রেজলিউট ডেস্কের পেছনে আরামদায়ক ভঙ্গিতে বসে থাকেন।

ট্রাম্প কোনও আক্রমণাত্মক মন্তব্য না করে বরং মামদানিকে একাধিকবার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, মামদানি একজন সত্যিকারের ভালো মেয়র হবেন বলে তিনি আশা করেন।

পরে তিনি আরও বলেন, তিনি খুব ভালো কাজ করতে পারবেন বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস।

নির্বাচনকালীন দু’জনই একে অন্যের বিরুদ্ধে কঠোর রাজনৈতিক মন্তব্য করেছিলেন। এক সাংবাদিক তাদের সেই পুরোনো মন্তব্যের কথা মনে করিয়ে দিলে দু’জনই বিষয়টি একপাশে রেখে আবারও প্রশংসামূলক সুরে ফিরে যান।

ট্রাম্প এমনকি মামদানিকে সুযোগ দেন প্রেসিডেন্টকে “ফ্যাসিস্ট” মনে করেন কি না—এ প্রশ্নের উত্তর দিতে। হাসতে হাসতে ট্রাম্প বলেন, “ঠিক আছে, চাইলে ‘হ্যাঁ’ বলুন, ব্যাখ্যা করার চেয়ে সেটা সহজ।

হবু মেয়রকে নিয়ে গতকাল ট্রাম্পের সবচেয়ে কঠোর মন্তব্য ছিল, ‘মামদানির কিছু মতামত একটু বাড়াবাড়ি’।

সম্মেলনের এক পর্যায়ে, নিউ ইয়র্কের রিপাবলিকান কংগ্রেসওম্যান এলিস স্টেফানিকের দাবি উদ্ধৃত করে একজন সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেন, ট্রাম্প কি এখন একজন ‘জিহাদির’ পাশে দাঁড়িয়ে আছেন বলে মনে করেন কিনা। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলেন, না, আমি তা মনে করি না। প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রচারণায় অনেক কথাই বলা হয়। তবে তিনি খুব যোগ্য একজন মানুষ।

মামদানি ও ট্রাম্পের একটি মিল হলো, তারা দু’জনেই নিউ ইয়র্কের মানুষ—বিশেষত কুইন্সের সঙ্গে তাদের সংযোগ রয়েছে। ট্রাম্পের শৈশব কেটেছে জ্যামাইকা এস্টেটসে, আর মামদানি থাকেন অ্যাস্টোরিয়ায়।

মামদানির ভাষায়, নিউ ইয়র্ক শহর নিয়ে তাদের ছিল “সামাজিক ভালোবাসা। ট্রাম্পও নিজের ছোটবেলার শহর নিয়ে সস্নেহ ভঙ্গিতে কথা বলেন। তিনি বলেন, এই শহর অসাধারণ হতে পারে—যদি মামদানি সাফল্য অর্জন করে, আমি খুব খুশি হব।

আইনশৃঙ্খলা ও অভিবাসন নিয়েও তাদের কিছু মিল পাওয়া যায়। মামদানি বলেন, নিউ ইয়র্কে ফেডারেল অভিবাসন অভিযানের বিষয়ে জনগণের উদ্বেগ তিনি ট্রাম্পকে জানিয়েছেন।

ট্রাম্প জানান, তারা অপরাধ মোকাবিলাকে অভিবাসনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। মামদানি মেয়র হলে তিনি নিউ ইয়র্কে থাকতে নিরাপদ বোধ করবেন বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প।ৃ

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়