News Bangladesh

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৯:৫৯, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ট্রাক-আশ্রয়কেন্দ্র লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৯১

ট্রাক-আশ্রয়কেন্দ্র লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৯১

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় একদিনে আরও ৯১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিফা হাসপাতালের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আবু সালমিয়ার পরিবারের সদস্য এবং গাজা সিটি থেকে পালানোর সময় প্রাণ হারানো চারজন রয়েছেন।

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, শনিবার একদিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৯১ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গাজা সিটি থেকে পালিয়ে আসা একটি ট্রাকের চার যাত্রী এবং খ্যাতনামা চিকিৎসক ড. আবু সালমিয়ার পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন।

ইসরায়েলি সেনারা গাজা সিটিকে দখল করার পাশাপাশি স্থানীয় মানুষদের দক্ষিণের তথাকথিত ‘কনসেন্ট্রেশন জোনে’ ঠেলে দিতে আকাশ ও স্থল হামলা চালাচ্ছে। শনিবারের হামলায় বসতবাড়ি, স্কুলে তৈরি আশ্রয়কেন্দ্র, বাস্তুচ্যুতদের তাঁবু এবং পালিয়ে আসা লোকজন বহনকারী ট্রাককে নিশানা করা হয়। শুধুমাত্র এসব হামলায় অন্তত ৭৬ জন নিহত হয়েছেন।

দিনের শুরুতে গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফার পরিচালক ড. মোহাম্মদ আবু সালমিয়ার পারিবারিক বাড়ি বোমায় ধ্বংস হয়। এতে তার ভাই, ভাবি ও তাদের সন্তানসহ অন্তত পাঁচজন মারা যান। 

আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে পর্তুগাল

শোকে ভেঙে পড়া ড. আবু সালমিয়া বলেন, আমি জরুরি বিভাগে ডিউটি করছিলাম। হঠাৎ আমার ভাই ও তার স্ত্রীর মরদেহ সামনে আসে। এখন আর কিছুই অবিশ্বাস্য নয়—প্রিয়জনেরা হয়তো শহীদ হয়ে যাচ্ছে, নয়তো আহত হয়ে আসছে।

হামাস এই হামলাকে নিন্দা জানিয়েছে এবং বলেছে, এটি চিকিৎসকদের গাজা ছাড়তে বাধ্য করার উদ্দেশ্যে চালানো এক “রক্তাক্ত সন্ত্রাসী বার্তা”। 
তারা দাবি করেছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী ১,৭০০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে হত্যা করেছে এবং ৪০০ জনকে আটক করেছে।

এদিকে, শহরের নাসর এলাকায় আরেকটি হামলায় একটি ট্রাকের ওপর ইসরায়েলি ড্রোন আঘাত হানে। এতে অন্তত চারজন নিহত হন। তাদের রক্তাক্ত মরদেহ রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে।

আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি জানিয়েছেন, হাজারো মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণ, কামান এবং কোয়াডকপ্টারের হামলা থেকে পালাচ্ছিল। 

তিনি বলেন, ইসরায়েল বিস্ফোরকভর্তি রোবটও ব্যবহার করছে, যা পুরো এলাকা ধ্বংস করে দিচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিবার বিস্ফোরণে মনে হয় ভূমিকম্প ঘটছে।

ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, গত আগস্ট থেকে শুরু হওয়া অভিযানে গাজার প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। এর আগে সেখানে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বসবাস করত। ইসরায়েলি সেনারা শুধু গত দুই সপ্তাহে অন্তত ২০টি বহুতল ভবন ধ্বংস করেছে।

পালিয়ে আসা মানুষজন এখন চরম বিপাকে পড়েছেন। 

হিন্দ খুদারি বলেন, আমরা দেখছি মানুষ রাস্তায় তাঁবু ফেলছে। কোনো পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, অবকাঠামো নেই—তাদের আর কোনো উপায়ও নেই।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়