নাইজেরিয়ায় বন্দুকধারীর হামলা, ৬৩ জন নিহত

ছবি: সংগৃহীত
নাইজেরিয়ার উত্তর–পূর্বাঞ্চলের বোর্নো রাজ্যে এক ভয়াবহ সশস্ত্র হামলায় অন্তত ৬৩ জন নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (০৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাত সাড়ে আটটার দিকে দারুল জামাল শহরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
শহরটি নাইজেরিয়া–ক্যামেরুন সীমান্তের কাছে অবস্থিত এবং সেখানে একটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন সেনা সদস্যও ছিলেন।
নাইজেরিয়ায় বিগত কয়েক বছর ধরে সরকার অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষদের আশ্রয়শিবির থেকে সরিয়ে নিজ গ্রামে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। তবে এই হামলার পর সেই পুরো প্রক্রিয়াই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
বোর্নো রাজ্যের গভর্নর বাবাগানা জুলুম সাংবাদিকদের জানান, দারুল জামালের মানুষদের মাত্র কয়েক মাস আগেই পুনর্বাসন করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা ৬৩ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছি। নিহতদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক ও সেনা উভয়ই রয়েছেন। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ছাড়ালো ৬৪ হাজার
২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম বিদ্রোহের কারণে বোর্নো ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল। যদিও পরে সহিংসতা কিছুটা কমে আসে, তবুও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকান প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী এখনও উত্তর–পূর্বাঞ্চলের গ্রামীণ এলাকায় নিয়মিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
গভর্নর জুলুম স্বীকার করেছেন, সেনাবাহিনীর পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা যাচ্ছে না। তাই অতিরিক্ত সহায়তার জন্য নতুন একটি বাহিনী—‘ফরেস্ট গার্ডস’—শিগগিরই মোতায়েন করা হবে বলে তিনি ঘোষণা দেন।
গ্রামবাসীদের বর্ণনা অনুযায়ী, শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কয়েক ডজন সশস্ত্র ব্যক্তি মোটরসাইকেলে চড়ে গ্রামে প্রবেশ করে। তারা চিৎকার করতে করতে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালায় এবং বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মালাম বুকার জানান, হামলা শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যান। পরে সকালে ফিরে এসে তিনি দেখেন— সব জায়গায় লাশ পড়ে আছে।
এই হামলা আবারও স্পষ্ট করেছে, নাইজেরিয়ার উত্তর–পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনও ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। একদিকে সরকারের পুনর্বাসন উদ্যোগ মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে, অন্যদিকে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর হামলা থামানো যাচ্ছে না। ফলে স্থানীয় মানুষদের মধ্যে নতুন করে ভয় ও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
সূত্র: এএফপি
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি