গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় চার সাংবাদিকসহ নিহত ১৫
ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
হামলায় নিহতদের মধ্যে ৪ জন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকও রয়েছেন। এই হামলায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন এবং হাসপাতালটির অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) এই হামলার ঘটনা ঘটে।
হামাস পরিচালিত সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, প্রথমে একটি হামলা চালানো হয়, যাতে বেশ কয়েকজন নিহত হন। পরবর্তীতে যখন উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে আহত ও নিহতদের উদ্ধারের জন্য পৌঁছান, তখন দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হলে আরও হতাহতের ঘটনা ঘটে। হাসপাতাল থেকে ধোঁয়া এবং ধ্বংসাবশেষের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ প্রকাশিত হয়েছে।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন চিকিৎসক সাংবাদিকদের রক্তাক্ত পোশাক দেখাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই দ্বিতীয় হামলাটি হয়।
এই হামলায় নিহত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কর্মীদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৫১
নিহতরা হলেন রয়টার্স সংবাদ সংস্থার ক্যামেরাম্যান হুসাম আল-মাসরি, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক মারিয়াম আবু ডাক্কা, আল জাজিরার সাংবাদিক মুহাম্মদ সালামেহ, এনবিসি-র ফটোগ্রাফার মুআথ আবু তাহা।
এপি তাদের ৩৩ বছর বয়সী সাংবাদিক মারিয়াম আবু ডাক্কার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
নাসের হাসপাতালটি দক্ষিণ গাজার একটি প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণ এবং বাসিন্দাদের জোরপূর্বক দক্ষিণাঞ্চলে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
এই হামলার পর গাজায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে নিহত সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীর সংখ্যা ২৪৪-এ পৌঁছেছে। গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় এই তথ্য জানিয়েছে।
গাজায় চলমান ইসরায়েলি আক্রমণে এ পর্যন্ত প্রায় ৬২,৭০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং বিপুল সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছেন। গাজা উপত্যকায় বর্তমানে তীব্র খাদ্য সংকট ও মানবিক বিপর্যয় চলছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও চলমান রয়েছে। এই হামলার ঘটনাগুলো চলমান আন্তর্জাতিক চাপকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








