News Bangladesh

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:১০, ২৩ আগস্ট ২০২৫

শ্রীলঙ্কার সাবেক রাষ্ট্রপতি বিক্রমাসিংহ আইসিইউতে ভর্তি

শ্রীলঙ্কার সাবেক রাষ্ট্রপতি বিক্রমাসিংহ আইসিইউতে ভর্তি

ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রীয় অর্থ অপব্যবহারের অভিযোগে গ্রেফতারের পর বর্তমানে কলম্বোর ন্যাশনাল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে। 

উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসজনিত সমস্যার কারণে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে দ্রুত আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। 

হাসপাতালের বরাত দিয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে দ্য মিরর ও দ্য হিন্দু পত্রিকা।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) সরকারি অর্থের প্রায় ১৬.৬ মিলিয়ন শ্রীলঙ্কান রুপি (প্রায় ৫৫ হাজার মার্কিন ডলার) ব্যক্তিগত ভ্রমণে ব্যবহারের অভিযোগে ৭৬ বছর বয়সী রনিল বিক্রমাসিংহেকে গ্রেপ্তার করে শ্রীলঙ্কার অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযোগটি ২০২৩ সালে তার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকালে যুক্তরাজ্য সফরের সঙ্গে সম্পর্কিত।

ঐদিনই তাকে কলম্বো ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে আদালত তার জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এরপর তাকে কলম্বোর প্রধান ম্যাগাজিন কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে পৌঁছানোর পরপরই উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তের শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় তার চিকিৎসার প্রয়োজন দেখা দেয়। প্রথমে তাকে কারাগারের হাসপাতালেই রাখা হয়েছিল।

কারা বিভাগের মুখপাত্র জগৎ বীরাসিংহে জানান, কারাগারের চিকিৎসা বোর্ডের পরামর্শে শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে তাকে ন্যাশনাল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। 

হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. রুকশন বেল্লানা নিশ্চিত করেন যে বিক্রমাসিংহের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে জরুরি চিকিৎসা ইউনিট থেকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গ্রেফতার

রনিল বিক্রমাসিংহের গ্রেফতারের পর তার রাজনৈতিক সহযোগী ও প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাকে দেখতে যান। 

সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে সাংবাদিকদের জানান, বিক্রমাসিংহে মানসিক দিক থেকে ভালো আছেন এবং তিনি জানেন রাজনীতিতে এমন ঘটনা ঘটে। 

প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা জানান, তিনিও তার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং বিক্রমাসিংহে ভালো আছেন। 

কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিক্রমাসিংহের অনুরোধে তাকে বাসা থেকে রান্না করা খাবার আনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বিক্রমাসিংহের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৮৬ ও ৩৮৮ ধারা এবং সরকারি সম্পত্তি আইনের ৫(১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে ন্যূনতম এক বছর থেকে সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। 

ম্যাজিস্ট্রেট নিলুপুলি লঙ্কাপুরা জানান, জামিনের পক্ষে উপযুক্ত কোনো কারণ আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি, তাই জামিন আবেদন নাকচ করা হয়েছে।

২০২২ সালে শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট ও গণ-অভ্যুত্থানের পর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের দেশত্যাগের পর রনিল বিক্রমাসিংহে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে তিনি সংসদ সদস্যদের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে পদত্যাগ করেন। 
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ২০২২ সালের অর্থনৈতিক সংকট থেকে শ্রীলঙ্কাকে উত্তরণের পেছনে তার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তার বিরুদ্ধে সরকারি অর্থের অপব্যবহারের অভিযোগে মামলা হয়, যা তার গ্রেফতারের কারণ।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়