ইসরায়েলের হামলায় একদিনে নিহত ৮১ ফিলিস্তিনি
ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে বুধবার (২০ আগস্ট) ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৩০ জন ত্রাণ সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। একই সময়ে অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন আরও তিনজন। খাদ্যাভাব-সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৯ জনে, যার মধ্যে ১১২ জন শিশু।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এবং আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনারা গাজা সিটির দখল নিতে প্রথম ধাপের অভিযান শুরু করেছে। সেনাদের এক কর্মকর্তা জানান, তারা গাজার বাইরের এলাকায় অবস্থান নিয়েছে এবং হামাসের শক্তিশালী ঘাঁটি ধ্বংসের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এই অভিযানে দশ হাজারেরও বেশি রিজার্ভ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এ অভিযানকে “বিপজ্জনক উত্তরণ” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি সতর্ক করেছেন, গাজার জনগণের জন্য আরও ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
গাজায় ত্রাণ, খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ সরবরাহ বন্ধ এবং লাগাতার সামরিক হামলার কারণে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্ক করেছে, অপুষ্টি কেবল ক্ষুধা নয়, এটি একটি নীরব হত্যাকারী যা আজীবন শারীরিক ক্ষতি করে এবং সাধারণ অসুখকেও প্রাণঘাতী করে।
আরও পড়ুন: লোকসভায় নতুন বিল: টানা ৩০ দিন জেলে থাকলেই মন্ত্রিত্ব শেষ
গাজার সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, জ্বালানি সংকটের কারণে জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। তাদের অনেক গাড়িই মিশনে যেতে পারছে না, কখনো জ্বালানি সংকটে, কখনো রক্ষণাবেক্ষণের যন্ত্রাংশ না থাকায়।
ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গাজা সিটির প্রায় প্রতি তিন শিশুর মধ্যে একজন এখন অপুষ্টিতে ভুগছে।
দক্ষিণ গাজার এক তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুতদের ওপর হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। দক্ষিণ গাজার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ফিলিস্তিনি জাতীয় বাস্কেটবল দলের সাবেক তারকা মোহাম্মদ শালান। শুধু বুধবারই ত্রাণ প্রত্যাশী অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থা গিশা বলেছে, ইসরায়েল ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিয়ে এটিকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। সাহায্য পৌঁছানো কার্যত অসম্ভব।
গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, প্রচণ্ড রোদে অনেক সময় হেঁটে যেতে হয় কর্মস্থলে এবং জরুরি সাহায্যপ্রার্থীকে সেবা দিতে কাজ করতে হয়।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ বলেছেন, ইসরায়েলের সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি নেটানিয়াহুকে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা কালাস সতর্ক করেছেন, যদি ইসরায়েল গাজার মানবিক প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে সব বিকল্প খোলা থাকবে।
জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








