News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২২:০৮, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

যাত্রাবাড়ীতে চোর সন্দেহে বিআইডব্লিউটিএ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা

যাত্রাবাড়ীতে চোর সন্দেহে বিআইডব্লিউটিএ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা

ফাইল ছবি

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় চোর সন্দেহে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ–পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সদরঘাট কার্যালয়ের ইলেকট্রিশিয়ান মো. আনোয়ার হোসেন বাবুকে (৪৩)। 

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে উত্তর শরিফপাড়া এলাকার ফারুক মিয়ার গ্যারেজ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত আনোয়ার মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ী এলাকায় স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ বসবাস করতেন। শুক্রবার ভোরে তিনি বাসা থেকে বের হন। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে তার পরিবার জানতে পারে, আনোয়ারকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে ফারুকের গ্যারেজে ফেলে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে তার মা দিলরুবা আক্তার ছেলেকে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান। মৃত্যুর আগে আনোয়ার তাকে জানান, লোহার রড ও অ্যাঙ্গেল দিয়ে তাকে পেটানো হয়েছে। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।

যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আমীর হোসেন জানান, খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে গ্যারেজ থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। নিহতের কপাল, নাক, পিঠ, হাত-পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এসব আঘাতেই তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

আরও পড়ুন: উত্তরায় বেপরোয়া গাড়িচাপায় পথচারী নিহত; গণপিটুনিতে আহত চালক

যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, নিহত ব্যক্তি মাদকাসক্ত ছিলেন এবং তাকে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল বলেও একটি সূত্রে তথ্য পাওয়া গেছে। তবে বিষয়টি তদন্তাধীন। এখনও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিহতের ভাই মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার ভাইয়ের কিছুটা মানসিক সমস্যা ছিল, তবে সে মাদকাসক্ত ছিল না। সকালে নামাজ পড়তে বের হওয়ার পরই খবর আসে, তাকে উত্তর শরিফপাড়ার একটি গ্যারেজে আটক করা হয়েছে। আমরা শুনেছি, স্থানীয় সুমন নামে একজন তাকে সেখানে নিয়ে যায়। এলাকার দারোয়ানরাও জানে কারা জড়িত। পুলিশ সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি দেশে গণপিটুনি বা সন্দেহের বশে পিটুনিতে প্রাণহানির ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ ধরনের ঘটনায় ১৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

নিহত আনোয়ার হোসেন বাবু পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে ছিলেন সবার ছোট। তিনি দুই মেয়ের জনক ছিলেন। তার অকাল মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়