News Bangladesh

লালমনিরহাট সংবাদদাতা || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১২:০৫, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

তিস্তার পানি কমলেও বেড়েছে দুর্ভোগ, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি 

তিস্তার পানি কমলেও বেড়েছে দুর্ভোগ, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি 

ছবি: নিউজবাংলাদেশ

পানি কমে যাওয়ায় লালমনিরহাটের তিস্তা পাড়ের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেলেও বেড়েছে ভাঙন ও দুর্ভোগ। হঠাৎ করে তিস্তার পানি বৃদ্ধি হওয়ার ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।  এছাড়াও নিম্নঞ্চলে পানি বের হতে না পারায় পরিবার দুর্ভোগে পড়েছেন।  

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৯ টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অবস্থিত  দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড বিপদসীমার  নিচে।  যা বিপদসীমার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৪ মিটার) ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

এর আগে রবিবার সন্ধ্যা তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায়  লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়। 

নদীপাড়ের মানুষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। রোববার দিনভর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ ছিল বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। ফলে তিস্তা নদীর বাম তীরের জেলা লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়। পানি বন্দি হয়ে পড়ে কয়েক হাজার পরিবার। ভেঙে যায় চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। ডুবে যায় চাষিদের আমন ধানের খেত। বন্যার স্রোতে ভেসে যায় চাষিদের পুকুরের মাছ ও জাগ দেয়া পাট। পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরন করা হয়েছে। 

বন্যার্ত এলাকায় টিউবয়েল ও টয়লেট ডুবে যাওয়ায় সব থেকে বড বিপাকে পড়েন নারীরা। পুরুষরা শৌচকাজ বাহিরে সেড়ে নিতে পারলেও নারীরা পড়েন বিপদ। বন্যার সময় গবাদি পশুপাখি আর বৃদ্ধ শিশু ও প্রতিবন্ধিদের নিয়ে পড়তে হয় চরম বিপদে। বন্যা দুর্গত এলাকায় সাপসহ বিভিন্ন পোকামাকড়ের উপদ্রুত বেড়েছে।

বন্যা শুরুর একদিন পরে উজানের ঢল কমে যাওয়ায় তিস্তার পানি প্রবাহ কমে যায়। সোমবার বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ে। পানিবন্দি থেকে মুক্তি মিলে বন্যাদুর্গতদের। বাড়ি ঘরে পানি উঠায় ঘরবাড়ির বেড়া নষ্ট হয়েছে, কাদা আর ময়লা আবর্জনা প্রবেশ করেছে এসব বাড়ি ঘরে। পানি নেমে যাওয়ায় ঘর বাড়ি মেরামত নিয়ে ব্যস্থ বন্যার্তরা। 

এ দিকে পানি কমে যাওয়ায় ভাঙনের মুখে পড়েছে তিস্তাপাড়ের বিভিন্ন এলাকা। কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ভোটমারী এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের পাঠানো ৫শত জিও ব্যাগে বালু ভরাট করে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে স্থানীয়রা। তবে গেল দুই দিনে ওই এলাকার ৫টি বসতভিটা নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে শত শত বাড়ি, মসজিদ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কমিউনিটি ক্লিনিকসহ অসংখ্য স্থাপনা। 

আরও পড়ুন: আশুলিয়ায় একই পরিবারের তিনজনের মরদেহ উদ্ধার

সোবাহান মিয়া বলেন, নদীকে তো তার পানি যাবার পথ করে দিতে হবে। কোম্পানী পানি যাবার পথ বন্ধ করে সোলার প্যানেল বসিয়েছে। ফসল সম্পদ হারাচ্ছি জনগন, ব্যবসা করছে কোম্পানী। দ্রুত ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানান তিনি। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিল কুমার বলেন, তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে।   নদীতে পানি কমলে পাড়ে ভাঙন দেখা দিতে পারে। জরুরী ভিত্তিতে ভাঙন রোধে জরুরী কাজ হিসেবে ১০ হাজার জিও ব্যাগ বরাদ্ধ পেয়েছি। আরও প্রয়োজন রয়েছে। তার জন্য বরাদ্ধ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। নদীপাড় সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষন করা হচ্ছে।
 

নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়