নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে আমলারা: ফারুক

ফাইল ছবি
জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রাক্কালে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক।
তিনি অভিযোগ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ কিছু সচিব ও আমলা এখনো গোপনে ভোট বানচালের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি’ উপলক্ষ্যে নবীন দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফারুক এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার দোসর অনেক সচিব-আমলা এখনো জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা নানা অজুহাত তুলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছে। যারা এই ষড়যন্ত্র করছে, অন্তর্বর্তী সরকারকে তাদের নাম জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আপনারা কোনো ব্যক্তির সরকার নন, আপনারা গণঅভ্যুত্থানের সরকার। জনগণ আন্দোলন করে আপনাদের ক্ষমতায় এনেছে। তাই আপনাদের দায়িত্ব এই ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে জাতিকে জানান। নির্বাচন নিয়ে আর কোনো অপচেষ্টা সহ্য করা হবে না।
জয়নুল ফারুক আরও বলেন, আজকে যারা নির্বাচন বানচালের নতুন নতুন ষড়যন্ত্র করছে, তারা আমাদের নব্য ফ্যাসিবাদ বলে আখ্যা দিতে চাইছে। সাবধান হয়ে যান। বিএনপি শহীদ জিয়ার দল, স্বাধীনতার ঘোষকের দল। এটি একটি আদর্শিক রাজনৈতিক দল। ষড়যন্ত্র করে এই দলকে দমন করা যাবে না।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বিলম্বে পিআর পদ্ধতির কথা বলছে জামায়াত: হাফিজ উদ্দিন
আলোচনায় ফারুক দেরিতে হলেও জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, আপনারা ঘোষণায় জানিয়েছেন—রোজার আগেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়সীমা নিশ্চিত করায় আমরা আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। তবে তা যেন বাস্তবায়িত হয়, এ বিষয়েও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
সভায় জয়নুল আবদিন ফারুক স্পষ্ট করেন, বিএনপি কোনো সহিংসতা নয়, বরং একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি সতর্ক করেন, জনগণের বিজয় ঠেকাতে যারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ এবং নবীন দলের সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ তালুকদার।
তারা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পরিবর্তনের যে সূচনা হয়েছে, তা বাধাগ্রস্ত করতে কেউ পারবে না।
সভায় দলীয় নেতারা অভিযোগ করেন, প্রশাসনের একটি অংশ এখনো সাবেক সরকারের প্রভাবমুক্ত হয়নি। নির্বাচন সামনে রেখে নানাভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও জবাবদিহিহীন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, যা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।
গত বছরের আগস্টে ছাত্র ও তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার এখন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতোমধ্যে রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন থাকায় বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বারবার সতর্ক করছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি