News Bangladesh

রাজনীতি ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ৮ আগস্ট ২০২৫

কলকাতায় ‘পার্টি অফিস’ খুলেছে আওয়ামী লীগ

কলকাতায় ‘পার্টি অফিস’ খুলেছে আওয়ামী লীগ

ঢাকায় থাকা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার এক বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সে গোপনে একটি ‘পার্টি অফিস’ খুলেছেন সাবেক শাসকদল আওয়ামী লীগের শীর্ষ ও মধ্যম পর্যায়ের নেতারা। একসময় বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই রাজনীতিকদের এখন কলকাতার একটি বাণিজ্যিক দপ্তরে নিয়মিত আনাগোনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। 

শুক্রবার (৮ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়েন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। প্রথমদিকে দলীয় বৈঠক বা যোগাযোগের কাজ তারা করতেন নিজেদের বাসায় কিংবা ভাড়াকৃত রেস্তোরাঁ বা ব্যাংকয়েট হলে। কিন্তু পরে প্রয়োজন পড়ে একটি নির্দিষ্ট ‘দপ্তর’ বা স্থায়ী মিলনস্থলের।

কলকাতার ব্যস্ততম একটি বাণিজ্যিক ভবনের ভিতরেই তৈরি হয়েছে সেই নতুন পার্টি অফিস। তবে বাহ্যিকভাবে কোথাও নেই কোনো সাইনবোর্ড, ছবি বা রাজনৈতিক প্রতীক। এমনকি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিংবা শেখ হাসিনার ছবি পর্যন্ত টাঙানো হয়নি। দেখতে একটি সাধারণ বাণিজ্যিক অফিসের মতো, যার চেয়ার-টেবিলও আগের ভাড়াটিয়া প্রতিষ্ঠানেরই।

আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, “আমরা চাইনি ঘরটির কোনো রাজনৈতিক পরিচয় স্পষ্ট হোক। এটি দলীয় অফিস হলেও বাইরে থেকে দেখে কেউ বুঝবে না। এমনকি দপ্তরের ভেতরেও কোনো দলীয় নথিপত্র রাখা হয় না।”

প্রায় ২,৫০০–২,৬০০ বর্গফুট আয়তনের এই দপ্তরে একসঙ্গে ৩০–৩৫ জন নেতা বসে বৈঠক করতে পারেন। বড় আকারের বৈঠক, যেখানে শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত থাকেন, সেগুলো এখনও ভাড়া করা রেস্তোরাঁ বা হলরুমেই আয়োজন করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক বছরে অন্তত ৭০ জন সাবেক সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের প্রায় ২০০ জন নেতা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাস করছেন। কেউ কেউ সপরিবারে থাকছেন, কেউবা কয়েকজন মিলে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যায় জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

বর্তমানে কলকাতায় অবস্থানরত নেতাদের মধ্যে দ্বাদশ সংসদের প্রায় ৮০ জন এমপি রয়েছেন বলে দাবি করেছে একটি সূত্র। তবে এদের মধ্যে কেউ কেউ পরে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা বা অন্যত্র চলে গেছেন।

আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারাও রয়েছেন কলকাতা ও আশপাশের এলাকায়। তারা সবাই কমবেশি এই ‘গোপন দপ্তরে’ আসেন, যদিও এর নির্দিষ্ট সময়সূচি নেই। প্রয়োজন অনুযায়ী চলে বৈঠক ও যোগাযোগ।

এই ‘গোপন পার্টি অফিস’ সম্পর্কে সাধারণ মানুষ কিছু জানে না বলাই স্বাভাবিক। এমনকি দলীয় কর্মীদের মধ্যেও অনেকে হয়তো এর অবস্থান সম্পর্কে জানেন না। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া এমন দপ্তর পরিচালনা করা সম্ভব নয়, এবং বিষয়টি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরে রয়েছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়