News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:৩৫, ১৩ জুলাই ২০২৫

১০ জনে বসে মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ চলে না: আমীর খসরু

১০ জনে বসে মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ চলে না: আমীর খসরু

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে প্রয়াত বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মরণসভায় বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়া, কমিশন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। 

তিনি বলেন, ঢাকা শহরে ১০ জন বিজ্ঞ ব্যক্তি চেয়ারে বসে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারেন না। তাদেরকে এই দায়িত্ব কেউ দেয়নি।

রবিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর এলজিইডি ভবন মিলনায়তনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এই স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। 

বক্তব্যে তিনি বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান, রাজনৈতিক সংস্কার ও বিরোধীদলগুলোর আচরণ নিয়ে বিস্তারিত মতামত তুলে ধরেন।

আমীর খসরু বলেন, কোনো কমিশন মানুষের মনের ভাষা বুঝতে পারবে না। শুধুমাত্র রাজনীতিবিদরাই পারেন মানুষের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে। এই পরিবর্তন নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সংসদ ও সরকারের মাধ্যমেই সম্ভব, যা জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকবে।

তিনি যোগ করেন, শত সংস্কার করেও রাজনৈতিক চরিত্র ও সংস্কৃতি না বদলালে কোনো সংস্থাই ফলপ্রসূ হবে না। তাই বিএনপি সেই রাজনৈতিক সংস্কার আনতে চায়—তারেক রহমান সেই লক্ষ্যেই কাজ করছেন। আমাদের সবাইকে সেই দায়িত্ব নিতে হবে—ঠান্ডা মাথায়।

বিএনপির এই নেতা জামায়াত ও এনসিপির সাম্প্রতিক বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বলেন, তারা বলছে নির্বাচনের দরকার নেই! নির্বাচন না করেই ক্ষমতার কথা বলছে। এরা কীভাবে রাজনৈতিক দল দাবি করে? জনগণের ভোটাধিকার ও মালিকানা ফিরে পাওয়ার বিরোধী বলেই তারা গণতন্ত্রের শত্রু।

খসরু বলেন, যারা নির্বাচন করবে না, করতেও দেবে না—তারা রাজনীতি না করে ‘পেশার গ্রুপ’ হিসেবে কাজ করুক। রাজনীতি করতে হলে নির্বাচনে যেতে হবে, নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে সম্মান করতে হবে।

আরও পড়ুন: বিএনপিকে তুড়ি মেরে উড়ানো যাবে না: মির্জা ফখরুল

বিএনপির এ নেতা বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মানুষের মনোজগতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। জনগণের এই মানসিক পরিবর্তন যে দল না বুঝবে, সে রাজনীতি করতে পারবে না।

তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টা যিনি সাম্প্রতিক সময়ে মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছেন—তিনি বিএনপির বিরুদ্ধে অবমাননাকর বক্তব্য দিচ্ছেন। আমরা মনে করি, তার দ্রুত পদত্যাগ করা উচিত।

চট্টগ্রামের এই জনসভায় তারেক রহমানের সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডন বৈঠকের প্রসঙ্গ তুলে আমীর খসরু বলেন, সেই বৈঠক থেকেই নতুন বাংলাদেশ গঠনের পরিকল্পনা স্পষ্ট হয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াই এর একমাত্র পথ, এর বাইরে কোনো পথ নেই।

আবদুল্লাহ আল নোমানের অবদানের প্রশংসা করে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে জাতীয় পর্যায়ে উঠে আসা নোমান ভাই দুঃসময়ে কর্মীদের পাশে ছিলেন। এখন এমন সাহসী, কর্মীবান্ধব নেতার অভাব অনুভূত হচ্ছে।

সভায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেন, ৫ আগস্টের ঘটনার পর বিএনপির নাম ব্যবহার করে কিছু ব্যক্তি অপকর্মে লিপ্ত। 

তারা দাবি করেন, আওয়ামী লীগের কিছু কর্মী বিএনপি পরিচয়ে বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি করছে। দলের বদনাম হচ্ছে। ৮০ শতাংশ মানুষের সমর্থন হারাতে বসেছি মাঠ পর্যায়ের কিছু নেতার অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে।

চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলেই দ্রুত বহিষ্কার করা হচ্ছে বলে নেতারা জানিয়ে দেন, বিএনপির আদর্শের সঙ্গে এ ধরনের কাজ যায় না। যেকোনো মূল্যে এই অপকর্ম বন্ধ করতে হবে।

আমীর খসরু বলেন, রাজনীতিতে মাথা গরম করা যাবে না। মতবিরোধ থাকলেও সম্মান দেখাতে হবে। কেউ শেখ হাসিনার পক্ষে বললেও তার সে অধিকার আছে। আমাদের রাজনীতি হবে সহনশীল—শান্তিপূর্ণ এবং যুক্তিনির্ভর।

সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়