News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আপডেট: ২০:৫৩, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

“প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীর সংখ্যা নিয়ে টিআইবির দাবি ভিত্তিহীন”

“প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীর সংখ্যা নিয়ে টিআইবির দাবি ভিত্তিহীন”

ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে অংশ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধি দল নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) যে প্রশ্ন তুলেছে, তা ‘ভুল তথ্যের’ ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেন, টিআইবির সাম্প্রতিক বিবৃতি দুঃখজনকভাবে যাচাইবাছাইহীন তথ্যের ওপর নির্ভরশীল।

তিনি বলেন, টিআইবির সাম্প্রতিক বক্তব্য ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হলো—৮০তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলে সদস্যসংখ্যা শেখ হাসিনা আমলের তুলনায় কম তো বটেই, বরং অনেক বেশি লক্ষ্যনির্ভর, পরিশ্রমী ও ফলাফলমুখী।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, টিআইবি ভুলভাবে দাবি করেছে যে এবারের প্রতিনিধিদল শতাধিক সদস্য নিয়ে গঠিত। প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা ৬২, যা গত বছরের ৫৭ জনের চেয়ে সামান্য বেশি। তবে গত বছরের পরিসংখ্যানে প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে সফরসঙ্গী ছয়জন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

তিনি আরও স্পষ্ট করেন, এবারের প্রতিনিধিদলের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নিরাপত্তা কর্মী, যারা প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়োজিত। আওয়ামী লীগ সমর্থকদের হুমকির কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হলেও সেটি যথেষ্ট নয়। অনেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা প্রতিদিন টানা ১৬ ঘণ্টা কাজ করছেন।

আরও পড়ুন: “দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন উচ্চতায় বাংলাদেশ”

প্রেস সচিব উল্লেখ করেন, গত পাঁচ দিনে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা অন্তত এক ডজন উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে ছয়জনেরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

তিনি বলেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের উদ্দেশ্য হলো বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক মঞ্চে জনগণের স্বার্থ তুলে ধরা, যেখানে বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো গৃহীত হয়।

শফিকুল আলম জানান, প্রতিনিধিদলের আকার নিয়ে প্রশ্ন উঠা অস্বাভাবিক নয়। তবে এ বছরের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ বাংলাদেশের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

তার ভাষায়, এমন সময়ে অধিবেশন হচ্ছে যখন বিভিন্ন মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টায় লিপ্ত। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করার সমন্বিত প্রচারণা চলছে। আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্ররা লাখ লাখ ডলার ব্যয় করছে অন্তর্বর্তী সরকার ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য ছড়াতে এবং বিদেশে লবিং চালাতে, যা কিছু আন্তর্জাতিক মহলের নীরব সমর্থনেও পরিচালিত হচ্ছে।

প্রেস সচিব জানান, এবারের প্রতিনিধিদলে এমন কয়েকজন রয়েছেন যারা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের রোহিঙ্গা সম্মেলনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবেন। রোহিঙ্গা সংকট এখনো অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মানবিক ও নিরাপত্তা ইস্যু, যেখানে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরা জরুরি।

এছাড়া বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা আনুষ্ঠানিক প্রতিনিধিদলের অংশ না হয়েও বৈশ্বিক নেতৃত্বের সঙ্গে মতবিনিময়ে অংশ নিচ্ছেন।

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের তিনটি রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও এ সফরে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাদের সহায়তায় কয়েকজন কর্মকর্তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ উদ্যোগকে তিনি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির বার্তা হিসেবে উল্লেখ করেন।

ফেসবুক পোস্টে শফিকুল আলম বলেন, টিআইবি একটি মর্যাদাপূর্ণ নাগরিক সমাজ সংগঠন, যা দীর্ঘদিন ধরে স্বচ্ছতার পক্ষে কাজ করছে। তবে যাচাই না করেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টের ভিত্তিতে বিবৃতি দেওয়াকে তিনি ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলে মন্তব্য করেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়