জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেড় লাখ পুলিশকে বিশেষ প্রশিক্ষণ

ফাইল ছবি
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশ দেড় লাখেরও বেশি সদস্যকে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। এই কর্মসূচি দেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
শুক্রবার (০৫ সেপ্টেম্বর) সরকারি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সদর দপ্তরের মানবসম্পদ (এইচআর) উন্নয়ন বিভাগের উদ্যোগে বিগত তিন মাস ধরে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবীদের পরামর্শে নয়টি প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করা হয়েছে।
পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) কাজী জিয়া উদ্দিন বলেন, জাতিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে আমরা দেড় লাখ বা তারও বেশি পুলিশ সদস্যকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করব।
এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস অডিটোরিয়ামে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম এবং অন্তর্বর্তী সরকারের আরও কয়েকজন উপদেষ্টা।
ডিআইজি কাজী জিয়া উদ্দিন জানান, পুলিশ মহাপরিদর্শক ও অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআর)-এর নেতৃত্বে প্রণীত এই প্রশিক্ষণ কোর্সটি নির্বাচনকালীন সম্ভাব্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: শাহজালাল বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হলো লতিফ সিদ্দিকীর ভাইকে
প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে দুটি প্রামাণ্যচিত্র, একটি ১৫ মিনিটের অডিও-ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট, একটি ৯ মিনিটের তথ্যচিত্র এবং একটি বুকলেট প্রস্তুত করা হয়েছে।
দেশব্যাপী পুলিশের ১৩০টি ছোট ও চারটি বড়—মোট ১৩৪টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রশিক্ষণকালে বাস্তবমুখী মহড়া ও রিয়েল টাইম অনুশীলনের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলানোর দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে।
গত ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকার পুলিশ সদর দপ্তরে চার ধাপে ১৫০ জন মাস্টার ট্রেইনারকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশের ১৯টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১,২৯২ জন মাস্টার ট্রেইনার বা ‘ট্রেইনার অব ট্রেইনার্স (ToT)’ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। এরাই পরে মাঠপর্যায়ের দেড় লাখেরও বেশি পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেবেন।
ডিআইজি জিয়া উদ্দিন বলেন, নির্বাচনের সময় যেসব পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটতে পারে, সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে বাস্তবমুখী মহড়া ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষতা বজায় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং সর্বাত্মক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন দেশের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে এবং পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে নির্বাচনকে সফল ও শান্তিপূর্ণ করা সম্ভব হবে।
সূত্র: বাসস
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি