দেশজুড়ে ৬৫ হাজার বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম স্থগিত
ছবি: সংগৃহীত
দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায় এবং শাহবাগে পুলিশের হামলার প্রতিবাদে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন সহকারী শিক্ষকরা।
রবিবার (০৯ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির ফলে সারা দেশের প্রায় ৬৫ হাজার ৫৬৭টি বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন এবং শিক্ষার্থীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে বেকায়দায় পড়েছেন।
শনিবার (০৮ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তাদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান ঘটাতে সরাসরি দশম গ্রেডের দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষকদের শাহবাগ অভিমুখী পদযাত্রায় বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ব্যবহার করে।
শিক্ষক নেতাদের অভিযোগ, শাহবাগে ‘কলম বিসর্জন’ কর্মসূচিতে পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে শতাধিক শিক্ষক আহত হন। অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণের পর অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বর্বর হামলা চালিয়েছে। আমাদের সমন্বয়ক মো. মাহবুবুর রহমানসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি শামসুদ্দিন মাসুদ জানান, দাবি বাস্তবায়ন ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে রোববার থেকে সারাদেশে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। একই সঙ্গে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
শিক্ষকদের তিন দফা দাবি
১. সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন প্রদান
২. উচ্চতর গ্রেডসংক্রান্ত জটিলতার স্থায়ী সমাধান
৩. সহকারী শিক্ষকদের শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা
এর আগে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল সরকার প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডে থাকা শিক্ষকদের বেতন ১২তম গ্রেডে উন্নীত করে। তবে এতে সহকারী শিক্ষকরা বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামেন।
সহকারী শিক্ষকদের একাংশ ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে সরকারকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছে। দাবি বাস্তবায়ন না হলে তারা ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস, ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে পরীক্ষা বর্জন ও আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








