News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ২ নভেম্বর ২০২৫
আপডেট: ০৯:২৯, ২ নভেম্বর ২০২৫

মোহাম্মদপুরে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত, গ্রেফতার ২

মোহাম্মদপুরে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত, গ্রেফতার ২

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ব্যবসায়িক বিরোধকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে মো. রাসেল (৩৪/৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। একই ঘটনায় বিপ্লব নামে আরেক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

শনিবার (০১ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিংয়ের ৪ নম্বর রোডে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাসেল পেশায় একজন মাইক্রোবাসচালক ছিলেন। তিনি চন্দ্রিমা মডেল টাউনের ৫ নম্বর রোডের ২০/এ নম্বর বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার রুদ্রপাড়া গ্রামে; পিতা আফছার আলম।

রাতের দিকে নবীনগর হাউজিং এলাকায় স্থানীয় বাজারের পাশে রাসেল ও তার বন্ধু বিপ্লব ভ্যানে বসা অবস্থায় দুর্বৃত্তরা অতর্কিতে তাদের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এসময় দুজনেই রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ী শাহিন ও দোকানদার তাইজুল তাদের উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন।

সবজি ব্যবসায়ী শাহিন নিউজবাংলাদেশকে বলেন, আমি ভ্যানগাড়িতে সবজি বিক্রি করি। হঠাৎ চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি, এক যুবক রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পরে আমি আর তাইজুল মিলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। চিকিৎসক জানান, সে আর বেঁচে নেই। কে বা কারা কুপিয়েছে, আমরা জানি না।

মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শহিদুল ওসমান মাসুম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং আহত বিপ্লবের কাছ থেকেও তথ্য নেয়। 

আরও পড়ুন: মোহাম্মদপুরে কিশোর গ্যাং পাটালি গ্রুপের ১০ সদস্য আটক

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, চন্দ্রিমা বাজারের পাশে মুরগির দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পেপার বাবু ও বিপ্লবের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধ থেকেই শনিবার রাতে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রাসেল ও বিপ্লবকে আহত করা হয়।

তিনি আরও বলেন, পুলিশ ঘটনাটির মূল হোতা পেপার বাবু ও তার সহযোগী মোবারককে গ্রেফতার করেছে। অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যেই পেপার বাবু ও মোবারককে আটক করা হয়। মুরগির দোকান বসানো নিয়ে বিরোধ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। তবে আরও কেউ জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

রমনা জোনের সহকারী উপ-পুলিশ কমিশনার (এসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলযোগে এসে রাসেল ও বিপ্লবের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ ঘটনায় আটক পেপার বাবুর নামে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

এদিকে নিহত রাসেলের পিতা আফছার আলম বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৫–২০ জনকে আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অহিদুল ইসলাম বলেন, শনিবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে রাসেল দুই বন্ধুসহ বাসায় ফিরছিলেন। নবীনগর হাউজিংয়ের চার নম্বর রোডে পৌঁছালে ১৫–২০ জন তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনজনই আহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে রাসেল মারা যান, আর আহত রিয়াদ ও বিপ্লব চিকিৎসাধীন।

পুলিশ জানায়, নিহত রাসেলের মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের ধরতে তল্লাশি ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

নিহত রাসেলের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। 
স্থানীয়দের দাবি, ব্যবসায়িক বিরোধের এমন প্রাণঘাতী পরিণতি ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে আগেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়