ঝিনাইদহে ১ সপ্তাহে ৩ শিশুর মৃত্যু
ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ জেলার হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। রোগীর চাপ বাড়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এক সপ্তাহে নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে মারা গেছে তিন শিশু।
সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহে জেলার হাসপাতাগুলোতে দুশতাধিক শিশু রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে সদর হাসপাতালে মারা গেছে তিন শিশু। ১৯ মার্চ সকালে ও রাতে দুই শিশু ও ২৩ মার্চ সকালে এক শিশু মারা যায়। দিনের তুলনায় রাতেই বাড়ছে শিশু রোগী ভর্তির সংখ্যা।
সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছে ৫০ জন শিশু। এর মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে ৩৪ ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৬টি শিশু ভর্তি রয়েছে। প্রতিদিন এ হাসপাতালের জরুরি ও বহিঃবিভাগের মাধ্যমে দুশতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা শিশু রোগীর অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, “দিনের পর দিন হাসপাতালে থাকলেও একটা শয্যাও মিলছে না। আর শয্যা না থাকার ফলে বাচ্চাদের সুস্থতার বদলে বাচ্চারা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তবুও এ সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের নেই কোনো উদ্যোগ।”
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “হঠাৎ করে আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এখন ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে দিনে প্রচণ্ড গরম আর রাতে ঠান্ডা পড়ছে। আর শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় শিশুরা এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তার পাশাপাশি অভিভাবকদের অসচেতনতাও এর জন্য অনেক দায়ী। মাঝে মাঝে রোগীর চাপ এতই বেশি হচ্ছে যে, চিকিৎসা সেবা দিতে অনেক সময় আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, “চিকিৎসা সেবা দেয়ার পাশাপাশি অভিভাবকদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যেমন তাদেরকে বলা হচ্ছে, বাচ্চাদের খাওয়ানোর আগে ভাল করে হাত ধুয়ে নিতে হবে, পানি বিশুদ্ধ করে খাওয়াতে হবে, হাঁচি-কাশি থেকে বাচ্চাদের দূরে রাখতে হবে। সর্বোপরি তাদেরকে সব বিষয়ে সচেতন থাকতে বলা হচ্ছে।”
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাহ্ আলম জানান, “রাতের বেলায় ভর্তিকৃত শিশু রোগীর চাপ একটু বেশি থাকে। পাশাপাশি দিনে ও রাতে ছোটদের পাশাপাশি বয়স্করাও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে।”
উল্লেখ্য, হাসপাতালটিতে শুধুমাত্র মহিলা মেডিসিন ও শিশু ওয়ার্ডে শিশুদের জন্য নির্ধারিত মাত্র আটটি শয্যা। কিন্তু শয্যার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রোগীর থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় রোগীদের স্থান হচ্ছে হাসপাতালের মেঝেতে ও বারান্দায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একশয্যায় দুই বা ততোধিক শিশু রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এতে সুস্থতার বদলে রোগীরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শিশুদের জন্য নেই নির্ধারিত কোনো শয্যা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/কেজেএইচ
নিউজবাংলাদেশ.কম








