News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৫:১০, ৯ অক্টোবর ২০২৫

ভারতীয় চালের আমদানি বাড়ায় কমেছে দাম

ভারতীয় চালের আমদানি বাড়ায় কমেছে দাম

ফাইল ছবি

প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে আমদানি হওয়া চালের কারণে দেশের বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর প্রভাব সরাসরি দামে পড়েছে। গত দুই সপ্তাহে পাইকারি পর্যায়ে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বস্তাপ্রতি সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

চট্টগ্রামের চাক্তাই ও পাহাড়তলীসহ দেশের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মিনিকেট সিদ্ধ বিক্রি হচ্ছে বস্তাপ্রতি ২ হাজার ৮০০ টাকায়, যা আগের তুলনায় ১০০ টাকা কম। পাইজাম সিদ্ধের দাম ২ হাজার ৭০০ টাকা (২০০ টাকা কম), কাটারিভোগ সিদ্ধ ১ হাজার ৭০০ টাকা (২০০ টাকা কম) এবং কাটারিভোগ আতপ ৩ হাজার ৯০০ টাকায় (১৫০ টাকা কম) বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া মিনিকেট আতপ ৩ হাজার ৫০ টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ ২ হাজার টাকা, স্বর্ণা সিদ্ধ ২ হাজার ৪০০ টাকা, বেতী আতপ ২ হাজার ২৫০ টাকা এবং মোটা সিদ্ধ ২ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ সব চালের দাম মানভেদে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, এক মাসের ব্যবধানে সরু চালের দাম ১.৮৪ শতাংশ এবং মাঝারি মানের চালের দাম ৩.৭০ শতাংশ কমেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ চাল আমদানির কারণে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে, ফলে দাম কমেছে। 
তবে ভোক্তাদের অভিযোগ, পাইকারিতে দাম কমলেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব এখনও স্পষ্ট নয়।

খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪–২৫ অর্থবছরে দেশে মোট ১৩ লাখ টন চাল আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে সরকারিভাবে ৮ লাখ ৩৫ হাজার টন এবং বেসরকারিভাবে প্রায় ৪ লাখ ৭০ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে। সরকারিভাবে আমদানিকৃত চালের মধ্যে ৬ লাখ টন ভারত থেকে, ১ লাখ টন মিয়ানমার থেকে, ১ লাখ টন ভিয়েতনাম থেকে এবং বাকি পাকিস্তান থেকে এসেছে। বেসরকারি আমদানির বড় অংশও ভারতীয় চাল।

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড বৃদ্ধি: স্বর্ণের ভরি এখন ২ লাখ ৯ হাজার

সরকার বাজার স্থিতিশীল রাখতে নতুন করে ভারত থেকে আরও ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় ব্যয় হবে ২১৯ কোটি ৯ লাখ টাকা, যেখানে প্রতি টনের দাম পড়বে ৩৫৯.৭৭ ডলার। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম সরকার-টু-সরকার (জি-টু-জি) পদ্ধতিতে আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রতি টনের দাম পড়বে ৩০৮ ডলার। এই প্রস্তাবগুলো ৮ অক্টোবর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে।

চট্টগ্রাম রাইস মিল মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন টিবিএসকে বলেন, ভারতীয় চালের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় দেশীয় চালের চাহিদা কিছুটা কমেছে। আগে কিছু বড় গ্রুপ বাজার নিয়ন্ত্রণ করত, এখন যে কেউ চাল আমদানি করতে পারছেন, ফলে প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। এর প্রভাবে দামও কমছে।

পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম নিজাম উদ্দিন বলেন, বাজারে প্রচুর পরিমাণে ভারতীয় চাল আমদানির কারণে দাম কমছে। এ ছাড়া দেশীয় চালেরও পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। আগামী দুই মাস পর কৃষকের ঘরে আমন ধান উঠলে চালের সরবরাহ আরও বাড়বে। সরবরাহ বাড়ার কারণে দাম কমছে।

সরকার চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে মোট ৪ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। এতে করে বাজারে চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত হবে এবং দাম স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়