প্রবাসীদের মোবাইল ফোন আমদানিতে গুরুত্বপূর্ণ ৭ সিদ্ধান্ত
ছবি: সংগৃহীত
প্রবাসীদের জন্য মোবাইল ফোন আমদানির সুবিধা বাড়ানো এবং দেশে অবৈধ ও চোরাচালানিকৃত ফোন নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো ঘোষণা করেছে।
গত ১ ডিসেম্বর সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের নেতৃত্বে এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসির মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সাতটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেছে মন্ত্রণালয়।
সভার মূল সিদ্ধান্তসমূহ হলো
১. প্রবাসীদের জন্য রেজিস্ট্রেশন সুবিধা:
প্রবাসীরা দেশে ছুটি কাটানোর সময় ৬০ দিন পর্যন্ত স্মার্টফোন রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ৬০ দিনের বেশি থাকলে মোবাইল ফোন রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক হবে।
২. বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন কার্ডধারীদের সুবিধা:
যেসব প্রবাসীর বিএমইটি কার্ড আছে, তারা ফ্রিতে মোট তিনটি ফোন নিয়ে আসতে পারবেন। অর্থাৎ, নিজের ব্যবহারের ফোনের অতিরিক্ত দুটি নতুন ফোন ফ্রিতে আনা যাবে। চতুর্থ ফোনের জন্য শুল্ক প্রযোজ্য হবে।
যাদের বিএমইটি কার্ড নেই, তারা নিজের ব্যবহারের ফোনের সঙ্গে অতিরিক্ত একটি ফোন ফ্রিতে আনতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে অবশ্য মোবাইল ক্রয়ের বৈধ কাগজ সঙ্গে রাখা আবশ্যক।
৩. বৈধ আমদানি শুল্ক হ্রাস:
সরকার বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানি করা সহজ করতে শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমাবে। বর্তমানে বৈধ আমদানি শুল্ক প্রায় ৬১ শতাংশ। শুল্ক কমানোর ফলে বৈধ মোবাইল ফোনের দাম কমে আসবে।
৪. অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের শুল্ক ও ভ্যাট সমন্বয়:
আমদানি শুল্ক কমালে বাংলাদেশের ১৩-১৪টি মোবাইল ফোন ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত ডিভাইসের শুল্ক ও ভ্যাটও সমন্বয় করতে হবে। বিটিআরসি ও এনবিআর একাধিকবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ শুরু করেছে। মন্ত্রণালয় বিশ্বাস করে, এটি দেশের ডিভাইস ইন্ডাস্ট্রির জন্য অনুকূল হবে।
আরও পড়ুন: বাজারে আসছে নতুন নকশার ৫০০ টাকার নোট
৫. সিম ব্যবহার ও সাইবার নিরাপত্তা:
সব ব্যবহারকারীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে যেন কেউ তাদের নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করে না। যেকোনো অনলাইন জুয়া, মোবাইল ব্যাংকিং, স্ক্যামিং বা সাইবার অপরাধে আপনার নামে সিম ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা তা নিয়মিত যাচাই করা উচিত। অপরাধ ও রেজিস্ট্রেশন ঝামেলা এড়াতে সবসময় নিজের নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করতে হবে।
৬. অবৈধ স্টক ফোন বৈধকরণ:
১৬ ডিসেম্বরের আগে বাজারে অবৈধভাবে আমদানি করা ফোনগুলোর মধ্যে যেগুলোর বৈধ আইএমইআই আছে, সেগুলো হ্রাসকৃত শুল্কে বৈধ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে ক্লোন ফোন এবং রিফারবিশড ফোনের জন্য এই সুবিধা প্রযোজ্য হবে না।
৭. সচল মোবাইলের অব্যাহত ব্যবহার:
বর্তমান ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কোনোভাবেই ১৬ ডিসেম্বরের আগে বন্ধ হবে না। এই সংক্রান্ত গুজবে কান না দেওয়ার জন্য জনগণকে সচেতন করা হয়েছে।
১৬ ডিসেম্বর থেকে চালু হচ্ছে এনইআইআর। বৈধ আইএমইআই নম্বরহীন হ্যান্ডসেট ক্রয় থেকে বিরত থাকতে হবে।
দেশে বিদেশের পুরনো ফোনের ডাম্পিং বন্ধ করা হবে। কেসিং পরিবর্তন করে ইলেকট্রনিক বর্জ্য দেশে ঢুকিয়ে অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করা হবে।
বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে ভারত, থাইল্যান্ড, চীন থেকে আসা ফ্লাইট শনাক্ত করা হচ্ছে। কাস্টমসের মাধ্যমে অভিযান দ্রুত শুরু হবে।
প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ (সংশোধনী) ২০২৫ মোবাইল সিমের ইকেওয়াইসি ও আইএমইআই রেজিস্ট্রেশন ডেটার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত তথ্য লঙ্ঘনকারীরা অপরাধের আওতায় আনা হবে।
মন্ত্রণালয় জনগণকে সচেতন করে বলেছে, ভয়-বিস্তারকারী গুজবে কান দেবেন না এবং বৈধ মোবাইল ব্যবহারে নিয়ম মেনে চলবেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








