News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজধানীতে আবারও ভূমিকম্প, রিখটার স্কেলে মাত্রা ৪.১

রাজধানীতে আবারও ভূমিকম্প, রিখটার স্কেলে মাত্রা ৪.১

ছবি: নিউজবাংলাদেশ

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এ কম্পন সাম্প্রতিক কয়েক দিনের ধারাবাহিক ভূমিকম্পের অংশ, যা জনমানসে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা ১৪ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড থেকে ৬টা ১৫ মিনিটের মধ্যে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় হালকা ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ঘুম ভাঙার ঠিক আগমুহূর্তে কেঁপে ওঠা এই কম্পন নগরবাসীর মধ্যে সাময়িক আতঙ্কের সৃষ্টি করে।

আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, নতুন ভূমিকম্পটির মাত্রা রিখটার স্কেলে ৪.১। ভূকম্পনটির গভীরতা ছিল ৩০ কিলোমিটার, যা তুলনামূলকভাবে অল্প গভীরতার কেঁপন হিসেবে বিবেচিত হয়।

ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (এনসিএস) জানায়, ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল গাজীপুরের টঙ্গী থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরপূর্বে এবং নরসিংদী শহর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার উত্তরে।

অন্যদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রুবাঈয়্যাৎ কবীর জানান, কম্পনের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর শিবপুর।

ইউরোপিয়ান-মেডিটেরেনিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি) তাদের হালনাগাদ নোটিসে জানায়, তারা রিখটার স্কেলে ৪.১ মাত্রার এই কম্পন রেকর্ড করেছে। তাদের তথ্যও উৎপত্তিস্থল ও গভীরতা সম্পর্কিত আঞ্চলিক তথ্যের সঙ্গে মিল রেখেছে।

নতুন ভূমিকম্পে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ভবন, সেতু কিংবা যান চলাচলে প্রভাব পড়েনি বলে স্থানীয় পর্যায় থেকেও কোনো জরুরি প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: দেশে নতুন ফাটলরেখা শনাক্ত: বাড়ছে ভূমিকম্প শঙ্কা

এর আগে সোমবার (১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা ৫৫–৫৭ মিনিটে ঢাকা, সিলেট, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

ইএমএসসি জানায়, সেই কেঁপনের মাত্রা ছিল ৪.৯ এবং উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের এলাকা।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ ইউএসজিএস জানায়, উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের মিনজিন অঞ্চলে, প্রায় ১০৬.৮ কিলোমিটার গভীরে।

বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৭টা ৫৬ মিনিটে বঙ্গোপসাগরে ৪.২ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। উপকূলীয় এলাকার কিছু অংশে এই কেঁপন হালকাভাবে টের পাওয়া যায়।

২১ নভেম্বর সকালে নরসিংদী অঞ্চলে হওয়া ৫.৭ মাত্রার তীব্র ভূমিকম্পে রাজধানীসহ প্রায় পুরো দেশ কেঁপে ওঠে। প্রায় ১৪ কোটি মানুষ কম্পন অনুভব করেন।

ওই ঘটনায় অন্তত ১০ জন মারা যান, কয়েকশ মানুষ আহত হন। রাজধানীর বহু ভবনে ফাটল দেখা দেয়; কিছু ভবন হেলে পড়ার ঘটনাও ঘটে।

পরদিন ২২ নভেম্বর সকাল ও সন্ধ্যায় আরও তিনবার কম্পন অনুভূত হয়, যা আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে তোলে।

ভূ-বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক ধারাবাহিক কেঁপে ওঠা ভূ-স্তরে চাপ স্থানান্তরের ইঙ্গিত হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে পুরোনো বা নরম মাটির ওপর নির্মিত ভবনগুলোকে পুনরায় জরিপের আওতায় আনা জরুরি।

ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে আতঙ্ক নয়, সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ—এমন বার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তারা জানায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার নির্দেশনা মেনে চললে ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি অনেক কমানো সম্ভব।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়