গুমের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি
ছবি: সংগৃহীত
রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জারি করা ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর মাধ্যমে গুম বা জোরপূর্বক অপ্রাপ্তিসাধ্য করার অপরাধে কঠোর শাস্তির বিধান আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়েছে।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে সরকারি গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, গুম বা অপহরণের ফলে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু ঘটলে বা পাঁচ বছরের মধ্যে তাকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব না হলে দায়ী ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মুখোমুখি হবেন।
এছাড়া, গুম সংক্রান্ত স্বাক্ষ্য-প্রমাণ ধ্বংস বা গোপন আটককেন্দ্র নির্মাণ, স্থাপন বা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
দুর্বৃত্ত কর্মকাণ্ডে জড়িত সরকারি কর্মচারী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, যদি গ্রেফতার, আটক বা অপহরণের পর বিষয়টি অস্বীকার করে বা ব্যক্তির অবস্থান, অবস্থা বা পরিণতি গোপন রাখে এবং এর ফলে তিনি আইনগত সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হন, তাহলে দায়ী ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন বা অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
আরও পড়ুন: জুলাই শহীদ পরিবারের আবাসনসহ ১৭ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
অধ্যাদেশে জেলার ও বিভাগের পর্যায়ে গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের অধীনে অভিযোগ দায়ের, বিচার প্রক্রিয়া ও সাজার ক্ষেত্রে জামিন ও আপসের সুযোগ থাকবে না। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন ও অভিযোগ গঠনের ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা কমান্ডার বা দলনেতা যদি অধস্তনদেরকে গুম বা অপহরণে আদেশ, অনুমতি, সম্মতি বা প্ররোচনা দেন বা নিজেই অংশগ্রহণ করেন, তাহলেও তিনি মূল অপরাধের জন্য দণ্ডিত হবেন।
এছাড়া, অবহেলা বা তত্ত্বাবধানের ব্যর্থতার কারণে অধস্তনরা এমন অপরাধ করলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও শাস্তির বিধান থাকবে।
অধ্যাদেশে পলাতক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অনুপস্থিতিতেও বিচার সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া রাখা হয়েছে। তদুপরি, গুম হওয়া ব্যক্তির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির ব্যবহার বা হস্তান্তরের জন্য ট্রাইব্যুনালকে পরিবারকে অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
গত ৬ নভেম্বর উপদেষ্টা পরিষদ অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করেছিল।
সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, এই অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে গুমের ঘটনায় শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এবং প্রমাণ নষ্ট, গোপন আটককেন্দ্র ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধকে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








