News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:০৮, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
আপডেট: ১৪:২১, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

গণহত্যা মামলার অভিযোগে জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

গণহত্যা মামলার অভিযোগে জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

ফাইল ছবি

জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় ইন্টারনেট বন্ধ করে গণহত্যা সংঘটনে সহযোগিতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে একই সময়কার গণহত্যার দায়ে দায়ের করা মামলাগুলোর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায় ট্রাইব্যুনাল সূত্র। 

ট্রাইব্যুনাল জানায়, মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অবস্থান বর্তমানে বিদেশে হওয়ায় আদালত তার বিরুদ্ধে পলাতক দেখিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

এর আগের দিন, ৩ ডিসেম্বর রাতে, দীর্ঘ তদন্ত শেষে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই–বাছাইয়ের পর প্রসিকিউশন চার আসামির বিরুদ্ধেই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল শুনানি শেষে অভিযোগগুলো আমলে নেন।

শুনানিতে অভিযুক্ত জুনায়েদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ গ্রহণ করে তাকে ১০ ডিসেম্বর আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন বিচারিক প্যানেল। পলক আগেই অন্য মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন।

একইসঙ্গে মামলার বাকি দুই আসামি সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তারাও বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকায় আদালত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাদেরও একই তারিখে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ‘অন্তর্বর্তী সরকার বৈধ, সংসদের অনুমোদন প্রয়োজন নেই’

দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের চূড়ান্ত মুহূর্তে আন্দোলন দমন ও চলমান সহিংসতার তথ্য বিশ্বের কাছে গোপন করতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রসিকিউশনের দাবি, সাইবার অবকাঠামো নিয়ন্ত্রণ এবং নীতিনির্ধারণী অবস্থানের কারণেই এ সিদ্ধান্তে সরাসরি যুক্ত ছিলেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

অন্যদিকে জিজ্ঞাসাবাদে পলক তদন্ত সংস্থাকে জানিয়েছেন, আন্দোলনের হত্যাযজ্ঞ উদ্ধারের তথ্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যাতে প্রকাশ না পায়, সে কারণে ইন্টারনেট শাটডাউন কার্যকর করা হয়।

উক্ত মামলার শুনানির সময় সেনা কর্মকর্তাদের ভার্চুয়াল উপস্থাপন সংক্রান্ত প্রসিকিউশনের একটি আবেদন আদালত নাকচ করেন। 
আদালত বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সরাসরি উপস্থিতি ছাড়া ভার্চুয়াল হাজিরা গ্রহণযোগ্য নয়।

মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গ্রহণের পর ট্রাইব্যুনাল পরবর্তী শুনানির জন্য ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ নির্ধারণ করেছেন। এদিন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর হওয়ার অগ্রগতি এবং কারাবন্দি তিন আসামির হাজির হওয়া–না–হওয়ার বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল অবস্থান নেবে।

এই মামলাটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় সংঘটিত একাধিক হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন, এবং সরকারি নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে ইন্টারনেট বন্ধসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বৈধতা ও নৈতিকতা ঘিরে দায়ের হয়। গণঅভ্যুত্থানের সময় ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের ফলে বহু হতাহত এবং ঘটনাবলির প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দেরিতে পৌঁছায়। তদন্ত দল বলছে, এ সিদ্ধান্তই গণহত্যাকে ত্বরান্বিত করেছে এবং নথিপত্র সংগ্রহকে জটিল করেছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়