News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:২৫, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

নির্বাচনে পুলিশের মানসিক প্রস্তুতির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

নির্বাচনে পুলিশের মানসিক প্রস্তুতির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী এক বিশেষ রাজনৈতিক মোড় হিসেবে উল্লেখ করে পুলিশ বাহিনীকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ৬৪ জেলার পুলিশ সুপার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এই বার্তা তুলে ধরেন।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্ট করে বলেন, নির্বাচনি চ্যালেঞ্জ গ্রহণের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে। এটি সাধারণ নির্বাচন নয়; এটি গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। শহীদদের আকাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ার এটাই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।

তিনি উল্লেখ করেন, এই নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের জন্ম দেবে এবং সেই জন্মপ্রক্রিয়ায় পুলিশকে ‘ধাত্রীর দায়িত্ব’ পালন করতে হবে। 

তার ভাষায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। পুলিশকেই ধাত্রীর মতো দায়িত্ব নিতে হবে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই নির্বাচনে বাহিনীকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মাঠে থাকবে এবং তারা স্বতন্ত্রভাবে মূল্যায়ন করবে— কোনো খুঁত, কোনো ত্রুটি, কোনো পক্ষপাতিত্ব ঘটছে কি না।

তিনি বলেন, এটা যেন ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকে। বিশ্ব যেন বলে— এমন নির্বাচন আগে দেখেনি। এই নির্বাচন দৃষ্টান্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়বে বহু দেশে।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম জাতীয় নির্বাচনে পুলিশ সুপার নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়েও ব্যাখ্যা দেন। 

আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচন নিয়ে জাতি গর্ব করবে: প্রধান উপদেষ্টা

তিনি জানান, সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে দৈবচয়ন (লটারি) পদ্ধতিতে ৬৪ জেলার পুলিশের নেতৃত্ব বেছে নেওয়া হয়েছে।

তার বক্তব্য অনুযায়ী, আমাদের লক্ষ্য ছিল কোনো পক্ষপাতিত্বের সুযোগ যেন না থাকে। দায়িত্ব ব্যক্তিগত পছন্দের ওপর ছেড়ে দিলে শত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও পক্ষপাত ঢুকে যেতে পারে। তাই দৈবচয়ন গ্রহণ করা হয়েছে।

সভায় অতীতের একাধিক বিতর্কিত নির্বাচনের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধান উপদেষ্টা তীব্র সমালোচনা করেন। 

তিনি বলেন, প্রহসনের নির্বাচন, প্রতারণার নির্বাচন, তামাশার নির্বাচন— অতীতের কিছু নির্বাচনের এমনই বিশেষণ রয়েছে। সেখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাসে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

তিনি যোগ করেন, এবারের নির্বাচন কেবল একটি রুটিন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়; বরং গণঅভ্যুত্থানে যাদের ত্যাগ ও অংশগ্রহণ ছিল— তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

বৈঠকের শেষাংশে পুলিশ বাহিনীর প্রতি অনুপ্রেরণা জোগাতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কাপুরুষের মতো বসে থাকার সময় নয়। শহীদদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করতে হবে। এই নির্বাচন সেই দায়িত্ব পালনের সুযোগ এনে দিয়েছে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে তিনি গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পুনর্গঠনের নির্বাচনী অধ্যায় হিসেবে দেখছেন; যেখানে পুলিশের নিরপেক্ষ ভূমিকা, মানসিক দৃঢ়তা, অনাকাঙ্ক্ষিত চাপ মোকাবিলা এবং দৃষ্টান্ত স্থাপনের দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়