News Bangladesh

স্পোর্টস ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৭:৫৬, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
আপডেট: ১৭:৫৮, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে বিসিবিতে অভিযান: দুদক 

দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে বিসিবিতে অভিযান: দুদক 

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগসহ (বিপিএল) একাধিক সিরিজের টিকিট বিক্রিতে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) হঠাৎ অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অবস্থিত বিসিবির কার্যালয়ে এই অভিযান পরিচালনা করেন দুদকের ঢাকা কার্যালয়ের তিন সদস্যের একটি বিশেষ দল।

দুদকের এই অভিযান পরিচালনা করেছেন দুই সহকারী পরিচালক আল আমিন ও মাহমুদুল হাসান এবং পরিদর্শক খলিলুর রহমান। 

অভিযান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান। 

তিনি জানান, বিভিন্ন ক্রিকেট লিগে বিশেষ করে থার্ড ডিভিশন কোয়ালিফায়িং পর্বে দল নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

তৃতীয় বিভাগে দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় অস্বাভাবিক হারে আবেদন বেড়ে যাওয়ায় সন্দেহের উদ্রেক করেছে। 

সহকারী পরিচালক আল আমিন বলেন, পূর্বে যেখানে ২-৩টি দল আবেদন করতো, এ বছর ৬০টির বেশি দল আবেদন করেছে। আগে আবেদন ফি ছিল ৫ লাখ টাকা, এবার তা কমিয়ে ১ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। হঠাৎ করে এত বেশি আবেদন ও আবেদন ফি কমার পেছনে কোনও গোপন লেনদেন বা সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। স্থানীয় ক্লাব ও সংগঠকদের প্রভাব এবং আর্থিক লেনদেনের বিষয়েও প্রাথমিকভাবে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। আমরা এখন বিসিবির জমা দেওয়া নথিপত্র খতিয়ে দেখছি।

টিকিট বিক্রিতে বিসিবির দেখানো আয় ও বাস্তব আয়েও বড় ধরনের গড়মিল রয়েছে বলে দুদকের সন্দেহ। 

আল আমিন বলেন, বিপিএলের তৃতীয় থেকে দশম আসর পর্যন্ত বিসিবি যে আয় দেখিয়েছে, তা প্রায় ১৫ কোটি টাকা। অথচ একাদশ আসরে অনলাইন টিকিট বিক্রি করেই বিসিবি আয় করেছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। আগে টিকিট বিক্রির তথ্য হয় গোপন রাখা হয়েছে, অথবা সেখানে বড় ধরনের অর্থ আত্মসাৎ ঘটেছে। 

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সফরে আসছে ভারত, সূচি ঘোষণা বিসিবির

দুদক আরও একটি গুরুতর অভিযোগ পেয়েছে মুজিব শতবর্ষ উদযাপনকে ঘিরে। যেখানে ১৫ কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হয়েছিল, সেখানে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৫ কোটি টাকা! অথচ দুদকের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রকৃত ব্যয় হয়েছে মাত্র ৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১৮ কোটির বেশি অর্থের কোনও স্বচ্ছ হিসাব পাওয়া যায়নি। 

সহকারী পরিচালক আল আমিন বলেছেন, দুদক নিজেরা কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে নামে না। গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে কমিশনের অনুমোদনের পরই আমরা অভিযান চালাই। বিসিবির ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। আজকের অভিযানে আমরা শুধু তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি। বিসিবি আমাদের সহযোগিতা করছে। সবকিছু কমিশনের কাছে উপস্থাপন করা হবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এরপর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

দুদকের অভিযান নিয়ে সাংবাদিকদের বিসিবির প্রধান নির্বাহী সুজন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। 

প্রধান নির্বাহী বলেছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনায় বিসিবি সব সময়ই সহযোগিতা করে এসেছে। দুদকের পক্ষ থেকে যে নথিপত্র চাওয়া হয়েছে, আমরা তা সরবরাহ করছি।

বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থায় এমন অভিযানের পর চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে ক্রীড়াঙ্গনে। এখন দেখার অপেক্ষা তদন্তের পর কী তথ্য বেরিয়ে আসে! 

দুদকের অভিযানে সহযোগিতা করে পুরোটা সময় উপস্থিত ছিলেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী। 

সমস্ত কাগজপত্র দিয়ে দুদককে সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়ে নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, এসবের ব্যাপারে আমাদের কাছে যত কাগজপত্র আছে, সব বিভাগকে সেগুলো দুদকের কাছে দিয়ে সহযোগিতার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। এখন যেহেতু অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে, তাই এর বেশি কিছু বলা উচিত হবে না।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়