News Bangladesh

স্পোর্টস ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৯:২৭, ৩ অক্টোবর ২০২৫

৪৮ দলের মহাযজ্ঞে সঙ্গী হবে ট্রাইওন্ডা

৪৮ দলের মহাযজ্ঞে সঙ্গী হবে ট্রাইওন্ডা

ছবি: সংগৃহীত

২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের অফিসিয়াল ম্যাচ বল উন্মোচন করেছে ফিফা। আয়োজক দেশ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই বলের নকশা। জার্মান ক্রীড়াসামগ্রী নির্মাতা অ্যাডিডাসের তৈরি বলটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ট্রাইওন্ডা’।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) নিউইয়র্কের ব্রুকলিন ব্রিজ পার্কে আয়োজিত এক জমকালো অনুষ্ঠানে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো আনুষ্ঠানিকভাবে বলটি উন্মোচন করেন। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাঁচ বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তি ফুটবলার—জার্মানির ইয়ুর্গেন ক্লিন্সমান, ব্রাজিলের কাফু, ইতালির আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো, স্পেনের জাভি হার্নান্দেজ এবং ফ্রান্সের জিনেদিন জিদান।

ফিফা সভাপতি ইনফান্তিনো বলেন, আমি আনন্দিত ও গর্বিত ট্রাইওন্ডাকে বিশ্বকাপের অফিসিয়াল বল হিসেবে উপস্থাপন করতে পেরে। বিশ্বকাপের জন্য অ্যাডিডাস আরেকটি আইকনিক বল তৈরি করেছে, যার নকশায় কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের ঐক্য ও উচ্ছ্বাস ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

‘ট্রাইওন্ডা’ নামটি এসেছে দুটি শব্দ থেকে—‘ট্রাই’ (তিন) এবং ‘ওন্ডা’ (ঢেউ)। আয়োজক তিন দেশের প্রতীকী ঐক্যকে বোঝাতে বলের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে লাল, সবুজ ও নীল রঙের ঢেউ। নকশায় যুক্তরাষ্ট্রের তারকা, কানাডার ম্যাপল লিফ এবং মেক্সিকোর ঈগল প্রতীক স্থান পেয়েছে। প্রতিটি উপাদান গ্রাফিকস আকারে ও খোদাই করা হয়েছে। এছাড়া বলটিতে সোনালি রঙের ছোঁয়া রয়েছে, যা বিশ্বকাপ ট্রফির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের প্রতীক।

আরও পড়ুন: ফুটবলে ‘গ্রিন কার্ড’ চালু করল ফিফা

বলটির ত্রিভুজাকৃতি কেন্দ্রীয় নকশা তিন আয়োজক দেশের ঐক্যকে ফুটিয়ে তোলে। এ বিষয়ে অ্যাডিডাসের মহাব্যবস্থাপক স্যাম হ্যান্ডি বলেন, প্রতিটি ছোটো জিনিসই বড় প্রভাব ফেলে। খোদাই করা নকশা, স্তরযুক্ত গ্রাফিকস এবং উজ্জ্বল রং এই বলকে অন্যগুলোর থেকে আলাদা করেছে। এখন পর্যন্ত এটাই আমাদের তৈরি করা সবচেয়ে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় ফিফা বিশ্বকাপের বল।

অ্যাডিডাস জানায়, ‘ট্রাইওন্ডা’ বলটি হলো বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ফুটবল। এতে ব্যবহৃত হয়েছে নতুন চার-প্যানেল নকশা, যা খেলায় স্থায়িত্ব ও এরোডাইনামিক নিয়ন্ত্রণ বাড়াবে। গভীর সেলাই বলের উড়ন্ত স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে এবং খোদাই করা প্রতীক আর্দ্র বা ভেজা অবস্থাতেও গ্রিপ বাড়াবে।

সবচেয়ে বড় নতুনত্ব হলো অ্যাডিডাসের কানেক্টেড বল প্রযুক্তি। বলের ভেতরে ৫০০ হার্জ মোশন সেন্সর চিপ স্থাপন করা হয়েছে, যা ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) সিস্টেমে রিয়েল-টাইম তথ্য পাঠাবে। ফলে অফসাইড, হ্যান্ডবল কিংবা ফাউলের মতো বিতর্কিত পরিস্থিতি দ্রুত ও নির্ভুলভাবে শনাক্ত করা যাবে।

২০২৬ সালের বিশ্বকাপ হবে ইতিহাসের প্রথম আসর যেখানে তিনটি দেশ যৌথভাবে আয়োজক এবং ৪৮টি দল অংশ নেবে। আগামী ১১ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর মোট ১৬টি শহরে অনুষ্ঠিত হবে টুর্নামেন্টের ম্যাচসমূহ।

ইতিমধ্যে ধাপে ধাপে অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু করেছে ফিফা। সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রায় ২১৬টি দেশ ও অঞ্চল থেকে সাড়ে চার মিলিয়নের বেশি ভক্ত প্রিসেল ড্র-তে নিবন্ধন করেছেন।

এদিকে, আগামী ৫ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের মূল ড্র অনুষ্ঠান।

১৯৩০ সালে উরুগুয়ে আসর থেকে শুরু করে প্রতিটি বিশ্বকাপে ভিন্ন অফিসিয়াল বল ব্যবহার করা হয়েছে। সময়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি ও আয়োজক দেশের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য। ২০০২ সালের কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপে ‘ফিভারনোভা’ বল দিয়ে ফুটবল প্রযুক্তির নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৬ সালের ‘ট্রাইওন্ডা’কে আরেকটি যুগান্তকারী সংযোজন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়