News Bangladesh

স্পোর্টস ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৫:৩১, ৩ অক্টোবর ২০২৫

ফুটবলে ‘গ্রিন কার্ড’ চালু করল ফিফা

ফুটবলে ‘গ্রিন কার্ড’ চালু করল ফিফা

ছবি: সংগৃহীত

চিলি থেকে শুরু হওয়া ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো চালু হলো রেফারির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ—যা ফুটবলকে নিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তিনির্ভর এক নতুন অধ্যায়ে।

ফুটবলের ইতিহাসে লাল ও হলুদ কার্ড দীর্ঘদিন ধরে শাস্তির প্রতীক হিসেবে পরিচিত হলেও, এবার চিলিতে শুরু হওয়া ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে দেখা গেল এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। প্রতিযোগিতার মাঠে এখন থেকে রেফারিদের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ পাচ্ছেন কোচেরা। আর এই সুযোগ এনে দিয়েছে ফুটবলের নতুন সংযোজন ‘গ্রিন কার্ড’।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টে ২৪টি দেশ অংশ নিচ্ছে। মূলত ক্রিকেটের ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস), টেনিসের হক-আই কিংবা আমেরিকান ফুটবলের ‘কোচেস চ্যালেঞ্জ’-এর আদলেই ফুটবলে এই বিশেষ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। 

ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো আশা প্রকাশ করেছেন, এই উদ্যোগ ফুটবলে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করবে এবং মাঠের বিতর্ক কমাবে।

নতুন এই নিয়মের প্রথম বাস্তব প্রয়োগ দেখা যায় রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) মরক্কো ও স্পেনের মধ্যকার ম্যাচে। স্পেনকে দেওয়া এক বিতর্কিত পেনাল্টির সিদ্ধান্তে আপত্তি জানাতে মরক্কোর কোচ মোহাম্মদ ওহাবি রেফারিকে দেখান গ্রিন কার্ড।

নিয়ম অনুযায়ী, কার্ড দেখানোর পর রেফারি বাধ্য হন ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) মনিটরে গিয়ে ঘটনাটি পুনর্বিবেচনা করতে। 

পর্যালোচনায় দেখা যায়, স্পেনের খেলোয়াড় ফাউলের শিকার হননি, বরং ‘ডাইভ’ দিয়েছেন। ফলস্বরূপ, রেফারি শুধু পেনাল্টি বাতিলই করেননি, সংশ্লিষ্ট স্পেনিশ খেলোয়াড়কে হলুদ কার্ডও দেখান। শেষ পর্যন্ত মরক্কো ম্যাচটি ২-০ গোলে জয়লাভ করে। চলতি আসরে শুধু এই ম্যাচেই নয়, মেক্সিকোর ম্যাচেও গ্রিন কার্ড ব্যবহার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে ভারতে আসছেন মেসি

এই কার্ডটি দেওয়া হয়েছে দলের কোচদের হাতে, রেফারির জন্য নয়। গ্রিন কার্ডের কার্যকারিতা ও ব্যবহারের ক্ষেত্রগুলো নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে:

  • ব্যবহারের সুযোগ: প্রতিটি দল ম্যাচে সর্বোচ্চ দুবার গ্রিন কার্ড ব্যবহার করতে পারবে।
  • কার্ড দেখালেই বাধ্যবাধকতা: কোচ গ্রিন কার্ড প্রদর্শন করলেই রেফারিকে বাধ্যতামূলকভাবে ভিডিও রিভিউ (এফভিএস-এর আওতায়) করতে হবে।

চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্র:

  • পেনাল্টি (হ্যাঁ বা না)
  • লাল কার্ডের সিদ্ধান্ত
  • গোল হয়েছে কি না তা নিয়ে দ্বিধা
  • ভুল খেলোয়াড়কে কার্ড দেখানো

ফিফা জানিয়েছে, এই কার্ড ব্যবহার করা হচ্ছে নতুন ভিডিও রিভিউ সিস্টেম (এফভিএস) এর আওতায়। ২০২৪ সালে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ব্লু স্টার ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশিপ এবং কলম্বিয়ায় অনূর্ধ্ব-২০ নারী বিশ্বকাপে এটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছিল।

ফুটবল বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রযুক্তির এমন প্রয়োগ খেলার মান বাড়াবে, দর্শকদের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করবে এবং বিতর্কিত সিদ্ধান্তের সংখ্যা কমাবে। তবে এই নিয়ম দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকবে কি না, তা নির্ভর করছে এর কার্যকারিতা ও ফুটবলের ওপর এর সামগ্রিক প্রভাবের ওপর।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৩ সালে পর্তুগালে নারীদের এক ম্যাচে প্রথমবার ‘হোয়াইট কার্ড’ চালু হয়েছিল, যা ন্যায্য খেলা বা ‘ফেয়ার প্লে’র স্বীকৃতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে সেটি তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি। এবার ফিফার নজর গ্রিন কার্ডে, যা ফুটবলকে আরও ন্যায়সঙ্গত করার পথে এক বড় পদক্ষেপ।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়