“দেশে অস্থিরতা ও দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে গভীর চক্রান্ত চলছে”

ফাইল ছবি
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা ও দেশের বিভিন্ন অস্থির পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে গভীর চক্রান্তের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি মনে করেন, দেশের অস্থিতিশীলতা, পাহাড়ে হঠাৎ দেখা দিচ্ছে অশান্তি এবং গার্মেন্টস খাতেও অশান্তির লক্ষণ, এসব ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়—প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে কোনো না কোনো চক্র জড়িত রয়েছে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, পাহাড়ে হঠাৎ অশান্তির বিষয়গুলো মানুষকে নানাভাবে ভাবিয়ে তুলছে এবং উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার জন্ম দিচ্ছে। এই সময়েই গার্মেন্টস সেক্টরেও অশান্তির চিহ্ন স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। এসব কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে কোনো না কোনো চক্র জড়িত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রত্যেককেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশবিরোধী কোনো চক্রান্ত বা মাস্টারপ্ল্যান থেকে থাকে, কোনো অশুভ পরিকল্পনা থেকে থাকে, তা ব্যর্থ করতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিতে হবে।
রিজভী বিশেষ করে জামায়াতের এক নেতার বক্তব্য উল্লেখ করেন, যেখানে বলা হয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ আক্রমণ করতে পারে এবং যুদ্ধ হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পানি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আমাদের অনেক অমীমাংসিত বিষয় আছে, যেগুলো আলোচনার মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে সমাধান করা যেতে পারে। কিন্তু আক্রমণের আশঙ্কা ছড়ানো কেন হচ্ছে? এটি দেশের জন্য বিপজ্জনক ও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী। জামায়াত নেতার ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের ঘোষণার কথার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে। বড় ধরনের কোনো গেমপ্ল্যান কি না তা নিয়েও মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে। এটি রাষ্ট্রবিরোধী কথা। দেশের স্বার্বভৌমত্বকে দুর্বল করার ইঙ্গিত রয়েছে।
তিনি ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থানের আশঙ্কাও ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: ধর্মকে নিয়ে বাণিজ্য পরিহার করতে হবে: শওকত আজিজ রাসেল
রিজভী বলেন, এক সময় আমরা একটি ফ্যাসিবাদের পতন দেখেছি। কিন্তু আজ আবারও নতুন করে মাটির ভেতর থেকে, পাতাল থেকে, আরেকটি ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে কি না—এটি মানুষের মনে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। কিছু কিছু কর্মকাণ্ড এই আশঙ্কাকে উসকে দিচ্ছে।
দুর্গাপূজা উৎসব সম্পর্কেও রিজভী সতর্কবার্তা প্রদান করেন।
তিনি বলেন, এই উৎসব অত্যন্ত আনন্দ, উৎসাহ এবং উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে। উৎসবকে ঘিরে যেমন নানা ধরনের অপতৎপরতা রয়েছে, তেমনি আমরা চাই উৎসবটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হোক। এজন্য আমরা সবাই সতর্ক আছি।
রিজভী আরও বলেন, প্রায় ৩৫ হাজার পূজামণ্ডপে বিএনপির নেতাকর্মীরা নজরদারি করছেন এবং নিরাপত্তা প্রহরীর দায়িত্ব পালন করছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিদিন নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছেন এবং পূজা নির্বিঘ্নে পালনের বিষয়ে বারবার নির্দেশ দিচ্ছেন। দেশ ও বিদেশের অনেক চক্রান্তকারী সক্রিয় রয়েছে, যারা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে চায়। হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করে জাতিগত সম্প্রীতির ঐতিহ্য নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। এসব চক্রান্ত প্রতিহত করতে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
রিজভী সকল গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের এই উৎসবগুলোতে সতর্কতার সঙ্গে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করুন। কেউ যাতে উসকানিমূলক কিছু করতে না পারে, সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য (দফতর সংযুক্ত) আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি