News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:৪৫, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
আপডেট: ১৪:৫৯, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার

দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার

ফাইল ছবি

ঢাকা ও চট্টগ্রামে এক সপ্তাহের মধ্যে পরপর তিনটি বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। 

পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মেট্রোপলিটন, রেঞ্জ ও জেলা পুলিশের সকল ইউনিটকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

বিশেষভাবে কেপিআই (কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন) স্থাপনাগুলোতে হামলার আশঙ্কা রয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দেশের সকল কেপিআই স্থাপনায় অতিরিক্ত নজরদারি ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির নির্দেশনা জারি করা হয়। 

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কেপিআই এলাকাগুলিতে পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থা একসঙ্গে কাজ করছে।

মেট্রোপলিটন, রেঞ্জ ও জেলা পুলিশের কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সম্ভাব্য হামলা প্রতিরোধে টহল বৃদ্ধি, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নজরদারির তাগিদ দেওয়া হয়েছে। 

চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, শনিবার রাতের নির্দেশনার পর অনেক জায়গায় পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এ ছাড়া সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার বাড়ানোর তাগিদও দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম আজ দুপুরে জানান, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সারা বছরই নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশনা থাকে। কেপিআই এলাকার নিরাপত্তায় পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থা একসঙ্গে কাজ করছে। জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও তাদের নিজ নিজ এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: শাহজালাল কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড, ক্ষয়ক্ষতি যাচাইয়ে ২ কমিটি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিশ্লেষক অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, বিমানবন্দর বা ইপিজেডের মতো স্থানে দীর্ঘ সময় ধরে আগুন জ্বলা অস্বাভাবিক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তদন্ত সংস্থাগুলোকে প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে এর পেছনের রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে হবে। 

তিনি আরও উল্লেখ করেন, আগের বছরগুলোর আগুনের ঘটনায় সঠিক তদন্ত না হওয়ায় স্বাভাবিক আগুনের ঘটনাতেও মানুষের মনে সন্দেহ জাগে। পুলিশ বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত হবে দ্রুত এসব ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ করা। জননিরাপত্তার প্রশ্নে মানুষকে আশ্বস্ত না করতে পারলে, সামনে আমরা যে নির্বাচন নিয়ে কথা বলছি তা নিয়েও নানা ধরনের সন্দেহ দেখা দিতে পারে।

দেশের ‘কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন’ বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহকে সংক্ষেপে কেপিআই বলা হয়। বর্তমানে সারা দেশে বঙ্গভবন, গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জাতীয় সংসদ, বিমানবন্দর, সচিবালয়, বিটিভি, কারাগার এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ মোট ৫৮৭টি কেপিআই রয়েছে। এগুলোর নিরাপত্তা কার্যক্রম তত্ত্বাবধানের জন্য সরকারের একটি শক্তিশালী নীতিমালা কমিটি রয়েছে। 

নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, একটি দেশের কেপিআইগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর সামগ্রিক জাতীয় নিরাপত্তা অনেকাংশে নির্ভরশীল।

কেপিআই নিরাপত্তাবিষয়ক নীতিমালা প্রথমে ইংরেজিতে ১৯৯৭ সালে প্রণীত হয় এবং ২০১৩ সালে বাংলায় হালনাগাদ করা হয়েছে। নীতিমালায় কেপিআইয়ের নিরাপত্তা ও তদারকি বাড়ানো, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, নিরাপত্তা কমিটি গঠন এবং নিয়মিত প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়া দর্শনার্থীদের তথ্য লিপিবদ্ধ করা, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, সিসিটিভি স্থাপন, ভেহিকেল সার্চ মিরর ও লাগেজ স্ক্যানার বসানোর কথাও বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সশস্ত্র আনসার নিয়োগের কথাও উল্লেখ রয়েছে।

সরকারি সূত্র জানায়, বর্তমানে সারা দেশে বঙ্গভবন, গণভবন, জাতীয় সংসদ, সচিবালয়, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ ৫৮৭টি স্থাপনা কেপিআই হিসেবে চিহ্নিত। এসব স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতে ২০১৩ সালের সংশোধিত নীতিমালায় নিয়মিত টহল, প্রতিবেদন পাঠানো, সিসিটিভি, ভেহিকেল সার্চ মিরর ও লাগেজ স্ক্যানার স্থাপনের নির্দেশ রয়েছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়