২৪৩ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা স্থগিত, শিক্ষক শোকজ

নোয়াখালীর ২৪৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের চলমান কমপ্লিট শাটডাউন ও কর্মবিরতির কারণে অনুষ্ঠিত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এসব প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষককে পৃথকভাবে শোকজ নোটিশ জারি করেছে।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইশরাত নাসিমা হাবীব শিক্ষক সমাজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। 

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ২ ডিসেম্বর থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা শুরু হয়েছে। একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নেওয়া বাধ্যতামূলক।

কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে পরীক্ষা নেননি। বরং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাধা সৃষ্টি করেছেন এবং বিদ্যালয় তালাবদ্ধ রাখার ঘটনা ঘটেছে। নোটিশে এ ধরনের আচরণ দায়িত্বহীন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া নোটিশে বলা হয়েছে, শিক্ষক সমাজের এই আচরণ সরকারি কর্মচারী আইন, ২০১৮ এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কেন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘শাটডাউন’ স্থগিত

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইশরাত নাসিমা হাবীব ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নির্ধারিত সময়ে তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা না হওয়ায় এবং সরকারি দায়িত্ব পালনে অবহেলা করা হওয়ার কারণে শিক্ষক সমাজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।”

অন্যদিকে, শিক্ষক নেতা আব্দুর রহমান জানিয়েছেন, আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া নোয়াখালীর ৫০ জনের বেশি সহকারী শিক্ষককে প্রশাসনিক কারণে অন্যান্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। সর্বশেষ মন্ত্রণালয় আদেশে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া পাঁচজনসহ মোট ৪২ জন শিক্ষককে পাশের জেলায় পাঠানো হয়েছে। এ তালিকায় বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও নোয়াখালী সদরের কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শামছুদ্দীন মাসুদও রয়েছেন।

তবে শিক্ষকরা ইতোমধ্যেই কর্মসূচি স্থগিত করেছেন এবং আগামী রবিবার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, দেশের ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তিন দফা দাবিতে ২৭ নভেম্বর থেকে কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। এর মধ্যে শেষ দুই দিন ধরে চলছে অনির্দিষ্টকালের কমপ্লিট শাটডাউন ও বিদ্যালয় তালাবদ্ধ রাখার কর্মসূচি।