আন্দোলন করা সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের ভিন্ন জেলায় ‘শাস্তিমূলক’ বদলি
ফাইল ছবি
তিন দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের কারণে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অসংখ্য সহকারী শিক্ষকদের ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’ করে ভিন্ন জেলায় বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রশাসনিক কারণে এই বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পলিসি অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের সহকারী পরিচালক মাহফুজা খাতুনের সই করা অফিস আদেশের মাধ্যমে এই বদলির নির্দেশনা দেওয়া হয়। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের নেতারাও এই তালিকায় রয়েছেন।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদকে নোয়াখালী থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর দক্ষিণ চরলক্ষ্ম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। শামছুদ্দিন মাসুদ জানান, সারাদেশে ৫০০ থেকে ৫৫০ জন শিক্ষককে একইভাবে ভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়েছে। শুধু নোয়াখালী জেলাতেই প্রায় ৪০ জন শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে।
সাধারণত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিজ জেলায় পদায়ন পান এবং এক জেলা থেকে অন্য জেলায় বদলির রেওয়াজ নেই। তবে শাস্তিমূলক বদলির ক্ষেত্রে প্রায়ই ভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়, এবং সেই ক্ষেত্রে অফিস আদেশে ‘প্রশাসনিক কারণ’ উল্লেখ করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করে। আদেশে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি স্মারকের ভিত্তিতে সহকারী শিক্ষকদের বদলি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া পাঁচজনসহ মোট ৪২ জন শিক্ষককে পাশের বিভিন্ন জেলায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২৪৩ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা স্থগিত, শিক্ষক শোকজ
আন্দোলনের পাঁচ শীর্ষ নেতার মধ্যে রয়েছেন:
- খায়রুন নাহার লিপি, প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক
- মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি, নোয়াখালী সদর কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক
- মো. আবুল কাশেম, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি, ময়মনসিংহের ফুলপুর চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক
- মো. মাহবুবার রহমান, প্রাথমিক শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক, জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক
- মো. মনিরুজ্জামান, কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহফুজা খাতুন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রশাসনিক কারণে এই বদলি করা হয়েছে। তবে ঠিক কতজনকে বদলি করা হয়েছে, তা তিনি নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেননি।
প্রসঙ্গত, চলমান আন্দোলন ২৭ নভেম্বর থেকে শুরু হয়। দেশের ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকরা তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় এবং আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় এমন শাস্তিমূলক বদলির ঘটনা ঘটেছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








