News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৭:২৯, ১ অক্টোবর ২০২৫

মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণা, ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণা, ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ফাইল ছবি

মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে আর্থিক প্রতারণা, হুন্ডি কার্যক্রম এবং স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে সিআইডি ৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। মামলায় আরও অজ্ঞাতনামা ৫–৭ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

মামলার চিহ্নিত অভিযুক্তরা হলেন মনীন্দ্র নাথ বিশ্বাস (৫০), ওয়াহিদুজ্জামান (৫২), মো. গোলাম সারওয়ার আজাদ (৫১), মো. তরিকুল ইসলাম ওরফে রিপন ফকির (৪৯), রাজীব সরদার (৩৭), উজ্জ্বল কুমার সাধু (৩৮)।

বুধবার (১ অক্টোবর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য জানিয়েছেন। 

তিনি বলেন, ঘটনার সূত্রপাত হয় একজন মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে বাংলাদেশের নাগরিকদের মাধ্যমে প্রতারণার ঘটনায়। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করে সিআইডিকে তথ্য প্রদান করে।

তদন্তে দেখা গেছে, মার্কিন নাগরিক ডেবোরাহ জন্সটন রামলো ‘ডেবি’-এর সঙ্গে প্রতারকচক্র যোগাযোগ স্থাপন করে সখ্যতা গড়ে তোলে। পরে তারা নিজেদের ড্রাগ ইনফোর্সমেন্ট এজেন্সি (ডিইএ) পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীকে ফাঁদে ফেলে ২ লাখ ২২ হাজার মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ ১৬ হাজার ৩৫১ টাকা) আত্মসাৎ করে।

ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক ওই অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে প্রেরণ করতে বাধ্য করা হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশে ওই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে অভিযুক্তরা তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দেয়।

আরও পড়ুন: আইজিপির নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার নিয়ে পুলিশের সতর্কবার্তা

অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তারা নিম্নলিখিত প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে ব্যাংক একাউন্ট খুলে বিপুল পরিমাণ অবৈধ লেনদেন করেছে—

  • আইনক্স ফ্যাশন: ইউসিবিএলে ১টি ব্যাংক একাউন্ট
  • ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ: ঢাকা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, এবি ব্যাংক ও এনআরবিসি ব্যাংকে পৃথক ৪টি ব্যাংক একাউন্ট
  • জামান এন্টারপ্রাইজ: ব্র্যাক ব্যাংকে ১টি ব্যাংক একাউন্ট
  • নোহা এন্টারপ্রাইজ: সাউথ-ইস্ট ব্যাংকে ১টি ব্যাংক একাউন্ট

এছাড়া মনিন্দ্র নাথ বিশ্বাসের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টেও অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্তরা স্বর্ণ চোরাচালানেও জড়িত। তারা মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত ব্যক্তিদের কাছ থেকে এবং ঢাকার তাঁতীবাজারসহ বিভিন্ন দোকান থেকে ভাঙারি স্বর্ণ সংগ্রহ করে তা গলিয়ে বার আকারে রূপান্তরিত করে দীর্ঘদিন ধরে ভারতে পাচার করেছে। এসব সোনার বার মূলত সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করা হয়েছে।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রতারণা, হুন্ডি কার্যক্রম এবং স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে অভিযুক্তরা মোট প্রায় ৬০৮ কোটি ৩৩ লাখ ৩০ হাজার ৩৭২ টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছে। এই অর্থ দিয়ে তারা ভোগ-বিলাস করেছেন এবং নামে-বেনামে সম্পত্তি অর্জন করেছেন।

ঘটনার পর ডিএমপি কোতোয়ালি থানায় ৩০ সেপ্টেম্বর মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫) অনুযায়ী মামলা (নং-২৪) দায়ের করা হয়েছে। 

সিআইডি জানায়, মামলার পূর্ণ রহস্য উদ্ঘাটন, অজ্ঞাতনামা আসামিদের সনাক্তকরণ এবং সবাইকে আইনের আওতায় আনার কাজ চলমান রয়েছে।

সিআইডি বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান বলেন, মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং আইনানুগ কার্যক্রমের মাধ্যমে সব অভিযুক্তকে দায়বদ্ধ করা হবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়