প্রতিটি ভবনে সেপটিক ট্যাংক বাধ্যতামূলক: রিজওয়ানা হাসান

রাজধানীকে 'ব্রাউন' শহর থেকে একটি সবুজ এবং স্মার্ট নগরীতে রূপান্তরের জন্য কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। আর এ জন্য প্রতিটি ভবনে সেপটিক ট্যাংক বা এসটিপি (স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) স্থাপন বাধ্যতামূলক করা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর র‍্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে আয়োজিত “নির্মিত/নির্মাণাধীন ভবনসমূহে সেপটিক ট্যাংক/এসটিপি স্থাপন” বিষয়ক এক অংশীজন সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আহ্বান জানান।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জোর দিয়ে বলেন, ঢাকা শহরের হাসপাতাল, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ সব ধরনের স্থাপনার জন্য এসটিপি স্থাপন কোনোভাবেই কঠিন কাজ নয়। 

তিনি মনে করেন, রাজধানীর নদী ও খালগুলোকে দূষণমুক্ত করা কঠিন হলেও তা অসম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ এবং উৎস থেকে বর্জ্য ফেলার প্রবণতা বন্ধ করা। তিনি আরও বলেন, কেবল ড্রেজিং করে কিংবা দায় এড়িয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ঢাকার আধুনিকায়ন ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভিশন, কার্যকর গভর্নেন্স এবং আইনগত সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আইন সংশোধন ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকা একটি আধুনিক, পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব নগরীতে রূপান্তরিত হবে। 

তিনি নগরীর ছাদবাগান, সড়ক বিভাজকে সবুজায়ন এবং পার্ক সংরক্ষণের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। একই সাথে ভবন নির্মাণে সেপটিক ট্যাংক ও এসটিপি স্থাপনের বাধ্যবাধকতা কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের ওপর তিনি জোর দেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ঢাকাকে সুন্দর করতে হলে সকল সংস্থাকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি বুড়িগঙ্গা নদীর করুণ অবস্থার কথা উল্লেখ করে বলেন, এটিকে এমনভাবে ধ্বংস করা হয়েছে যে রক্ষা করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। এর জন্য সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে।

রাজউকের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল মতিন।

এছাড়াও সভায় বক্তব্য দেন রাজউকের সদস্য (পরিকল্পনা) মো. গিয়াস উদ্দিন। সেমিনারে প্রাথমিক উপস্থাপনা দেন রাজউকের উপনগর পরিকল্পনাবিদ সাঈদ রেজাউল হক। বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা করেন ওয়াটারএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, ডাইকি এক্সিস বাংলাদেশ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুই ওয়াসে এবং প্রধান নির্বাহী শফিকুল ইসলাম।

সভায় উপস্থিত অংশগ্রহণকারীরা ঢাকাকে একটি টেকসই ও বাসযোগ্য নগরীতে রূপান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।