তরুণদের ‘থ্রি-জিরো ক্লাব’ গড়ে তোলার আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বকে বদলে দিতে তরুণদের ‘থ্রি-জিরো ক্লাব’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘সোশ্যাল বিজনেস, ইয়ুথ অ্যান্ড টেকনোলজি’ শীর্ষক জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সাইডলাইন বৈঠকে প্রধান প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমি তিন শূন্যের এক পৃথিবীর কথা বলছি—শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ (যাতে দারিদ্র্য দূর হয়) এবং শূন্য বেকারত্ব (যা সবার সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে সম্ভব)।” তিনি আরও যোগ করেন, শূন্য বর্জ্য (জিরো ওয়েস্ট) ধারণাটিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি জাতিসংঘ মহাসচিবের ‘জিরো ওয়েস্ট ইনিশিয়েটিভ’-এর অংশ।
“এটি কোনো কল্পনা নয়, ইতিমধ্যেই বাস্তবে রূপ নিচ্ছে,” বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা তরুণদের উৎসাহিত করে বলেন, “আমরা সর্বত্র ‘থ্রি-জিরো ক্লাব’ গড়ে তুলতে চাই—যেখানে প্রত্যেকে থ্রি-জিরো মানুষ হয়ে উঠতে পারে। একজন থ্রি-জিরো মানুষ প্রতিশ্রুতি দেয় টেকসইভাবে জীবনযাপন করার, বর্জ্য কমানোর এবং সামাজিক উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করার। একই সঙ্গে তারা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, সম্পদ বৈষম্য এবং বেকারত্বে কোনো অবদান না রাখার জন্য সচেষ্ট থাকে।”
ড. ইউনূস আরও বলেন, যত বেশি মানুষ এই আন্দোলনে যুক্ত হবে, ক্লাবগুলো গড়ে উঠবে থ্রি-জিরো পরিবারে, থ্রি-জিরো গ্রামে, থ্রি-জিরো শহরে—এবং একদিন গড়ে উঠবে একটি থ্রি-জিরো বিশ্ব।
আরও পড়ুন: আখতারের ওপর ডিম নিক্ষেপ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা: প্রেস সচিব
তিনি বলেন, “এটি একটি ছোট্ট পদক্ষেপ দিয়ে শুরু হয়, কিন্তু একসাথে সেই পদক্ষেপগুলোই বিশ্বকে পাল্টে দিতে পারে। আমি সবসময় বিশ্বাস করেছি যে এই ধরনের ফোরাম কেবল বক্তৃতার জায়গা নয়—এটি অনুপ্রেরণার ক্ষেত্র।”
অধ্যাপক ইউনূস যোগ করেন, “এই অস্থির সময়ে প্রকৃত রূপান্তর নিহিত আছে আমাদের ঐক্যে। যদি আমরা একসাথে হাত মিলাই—সামাজিক ব্যবসার শক্তি, তরুণদের উদ্যম এবং প্রযুক্তির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাই—তবে জটিলতম বৈশ্বিক সংকটও আমরা সমাধান করতে পারব। আসুন আমরা এক নতুন তরঙ্গের স্থপতি হই—ন্যায়, টেকসই ও আশার ভিত্তিতে নির্মিত এক পৃথিবীর, যেখানে আমাদের যৌথ স্বপ্ন মানবতার জন্য নতুন ভোরের সূচনা করবে।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি