News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১২:৪৭, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাড়ছে সরকারি পেনশন সুবিধা, কমছে জটিলতা

বাড়ছে সরকারি পেনশন সুবিধা, কমছে জটিলতা

ফাইল ছবি

অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের পেনশন-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন এবং সুবিধা সম্প্রসারণে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক বৈঠকে পেনশন পুনঃস্থাপন, পরিবারের পেনশন, চিকিৎসা সহায়তা এবং উৎসব ভাতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিস্তৃত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব আ ক ম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী পেনশনভোগীদের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। সভায় পেনশন-সংক্রান্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী সরকারি কর্মচারীরা অবসর গ্রহণের ১৫ বছর পর পেনশন পুনঃস্থাপন করতে পারেন। তবে এই অপেক্ষাকাল কমিয়ে ১০ বছর করার বিষয়ে অর্থ বিভাগকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

পেনশন ভোগীর মৃত্যুর পর তার প্রথম স্ত্রী বা স্বামী আজীবন পেনশন পান। নতুন সিদ্ধান্তে, পেনশন ভোগী অবস্থায় দ্বিতীয় বিবাহ করলে মৃত্যুর পর দ্বিতীয় স্ত্রী/স্বামীকেও নিয়ম অনুযায়ী পারিবারিক পেনশন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার জন্য প্রস্তাব করা হবে। এছাড়া, পেনশন পুনঃস্থাপনের আগে মৃত্যু হলে তার স্বামী/স্ত্রী বা যোগ্য উত্তরাধিকারের পেনশন মঞ্জুর করার বিষয়টি অর্থ বিভাগ খতিয়ে দেখবে।

অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/কর্মচারী যদি জটিল রোগে আক্রান্ত হন, তাহলে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড থেকে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রবাসী কর্মকর্তাদের পেনশন সংক্রান্ত কাগজপত্র ও আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে পর্যালোচনা করা হবে।

আরও পড়ুন: শারদীয় পূজার ছুটিতে ভিন্নতা

শতভাগ পেনশন সমর্পণকারীদের উৎসব ভাতা ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক হিসাব করা হলেও, পেনশন পুনঃস্থাপনের পর ভাতাসহ বর্ধিত অর্থ যোগ হচ্ছে না। এই অসুবিধা সমাধানের জন্য অর্থ বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, যারা একসঙ্গে পেনশনের সমস্ত টাকা উত্তোলন করেছেন, তাদের পুনরায় মাসিক পেনশন প্রাপ্তি এবং সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি-সংক্রান্ত কমিটিতে জনপ্রশাসন সচিবকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি অর্থ বিভাগকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত দিতে বলা হয়েছে। সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ব্যাপক প্রচার চালানোর নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরকে দেওয়া হয়েছে।

১৯৮০ সাল থেকে সরকারি কর্মচারীরা পেনশনের পুরো টাকা একসঙ্গে উত্তোলনের সুযোগ পাচ্ছেন। তবে একবারে টাকা উত্তোলন করলে মাসিক পেনশন প্রাপ্তি বন্ধ হয়ে যায়। এবার এ ধরনের কর্মচারীরাও পুনরায় মাসিক পেনশন ও সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা পেতে সক্ষম হবেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, পেনশন-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে এর আগে সময় সময়ে সরকারের নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। বর্তমান সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আমরা নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছি।

অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত আমরা পেয়েছি। এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।

সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে নিম্নলিখিতদের অবহিত করা হয়েছে: অর্থ বিভাগ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, পেনশন অ্যান্ড ফান্ড ম্যানেজমেন্টের চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসার এবং বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির প্রশাসক।

উল্লেখযোগ্যভাবে, এই নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের পেনশন পুনঃস্থাপন, পারিবারিক পেনশন, চিকিৎসা সহায়তা, উৎসব ভাতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা সম্প্রসারণ করে তাদের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়