News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৭:৪৬, ৮ অক্টোবর ২০২৫

‘বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের মন্তব্য অপ্রত্যাশিত’

‘বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের মন্তব্য অপ্রত্যাশিত’

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্যকে “অপ্রত্যাশিত” আখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, নির্বাচন তাদের বিষয় নয়, এটা সম্পূর্ণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। 

বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে, গত ৬ অক্টোবর নয়াদিল্লির সাউথ ব্লকে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিক্যাব) সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশে একটি অবাধ, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় ভারত। 

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন সারা বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে— সেটিই মাথায় রেখে বাংলাদেশ নিজের নির্বাচন আয়োজন করবে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কাঠামো নির্ধারণের দায়িত্ব বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ, সাধারণ মানুষ ও সিভিল সোসাইটির ওপর নির্ভর করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

বিক্রম মিশ্রি আরও বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার নির্বাচিত না হলেও ভারত শুরু থেকেই এই সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। 
তিনি জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রফেসর ইউনূসকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরপরই অভিনন্দন জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অপ্রত্যাশিত। নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, অন্য কোনো দেশের মন্তব্য করার এখতিয়ার নেই।

রাষ্ট্রপতির ছবি সরানো প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর বিষয়ে রাষ্ট্রপতির চিঠি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পেয়েছে দেরিতে। তবে ছবি টাঙানোর বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেই। 

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতির বিষয় অনেক ওপরের। উনি তার অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন। এইটুকুই আমরা জানি।

আরও পড়ুন: ‘সেফ এক্সিট’ খুঁজছে কারা, নাহিদ ইসলামকেই স্পষ্ট করতে হবে

উল্লেখ্য, গত আগস্টে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোতে রাষ্ট্রপতির ছবি অপসারণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে লেখা এক চিঠিতে তার সম্মান ক্ষুণ্ন হওয়ার আক্ষেপ প্রকাশ করেন। 
তিনি বলেন, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হওয়া আলোচনার কারণে বিশ্বব্যাপী আমার সম্মান ভূ-লুষ্ঠিত হয়েছে। 
রাষ্ট্রপতি সরকারের ‘জিরো প্রোট্রেট’ নীতিকে সমর্থন জানিয়ে আরও কৌশলী উপায়ে বিষয়টি পরিচালনার পরামর্শ দেন।

চিঠি প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, চিঠি অনেকদিন পর আমার কাছে এসেছে। আমার মনে হয়, এটা নিয়ে আমরা আলোচনা না করি। 

তিনি আরও বলেন, কোনও আইনও করা হয়নি, চিঠিও ইস্যু করা হয়নি। কিন্তু সাধারণভাবে কোনো ছবি থাকবে না— এটাই নিয়ম। এটা নিয়ে বিতর্ক থাকবে, তাই এখানেই থেকে যাই।

জাতিসংঘের ৮১তম সাধারণ অধিবেশনে সভাপতির পদে বাংলাদেশের প্রার্থিতা বাতিল হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। 

তিনি বলেন, ২০২৬ সালের জুনে নির্বাচন হবে। এতে ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশ পরস্পর মুখোমুখি হবে না। ফিলিস্তিন এত আগ্রহ প্রকাশ করেনি।

তুরস্কের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, তুরস্ক সামরিকভাবে একটি শক্তিশালী দেশ। তাদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। সামরিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যদি কোনো চুক্তি হয়, তাহলে বাংলাদেশ লাভবান হবে।

আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর বাসায় নরওয়ে, সুইডেন ও ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতদের গোপন বৈঠককে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। 

তিনি বলেন, বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা যে কারো বাসায় যেতে পারেন। এতে কোনো অসঙ্গতি নেই।

সূত্র অনুযায়ী, ৬ অক্টোবর দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে গুলশানে সাবের হোসেনের বাসায় ঢাকায় নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হ্যাকন আরাল্ড গুলব্রানসেন, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস লিনাস রাগনার উইকস এবং ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মলার প্রবেশ করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে অত্যন্ত গোপনীয়তায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। তিন রাষ্ট্রদূত ফ্ল্যাগবিহীন গাড়িতে এসে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করে বাসা ত্যাগ করেন।

এই তিন স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন ও মানবাধিকার বিষয়ে অংশীদার হিসেবে কাজ করে আসছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়