‘সচেতনতা ও টিকাদানের মাধ্যমে টাইফয়েড নিয়ন্ত্রণ সম্ভব’

ছবি: সংগৃহীত
দেশে দীর্ঘদিন ধরেই টাইফয়েড নীরবভাবে ছড়িয়ে থাকলেও এবার সরকারের উদ্যোগে এটি কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণের পথে বড় পদক্ষেপ নেওয়া হলো। স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শিশুদের টিকাদানের মাধ্যমে দেশজুড়ে টাইফয়েড প্রতিরোধের লক্ষ্য রাখা হয়েছে। রাজধানীসহ অন্যান্য অঞ্চলে এক মাসব্যাপী ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু-কিশোরদের বিনামূল্যে এক ডোজ ইনজেকশনের মাধ্যমে টিকা দেওয়া হবে।
রবিবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা কেন্দ্র থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
তিনি বলেন, দেশে টাইফয়েডে এখনও শিশুদের মৃত্যু হয়—এটি আমাদের জন্য লজ্জার বিষয়। ডায়রিয়া, রাতকানা রোগসহ অনেক রোগ আমরা ইতিমধ্যে প্রতিরোধ করেছি। এবার টাইফয়েড প্রতিরোধেও আমরা সফল হব।
নূরজাহান বেগম আরও বলেন, আমাদের এখন সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হলো রোগ প্রতিরোধ। যত বেশি মানুষ, বিশেষ করে শিশুদের প্রতিরোধমূলক টিকার আওতায় আনা যাবে, ততই হাসপাতালগুলোতে ভিড় ও চাপ কমবে। টাইফয়েড এমন একটি রোগ, যা সচেতনতা ও টিকাদানের মাধ্যমে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে যদি প্রতিটি শিশুর কাছে টিকা পৌঁছে দিতে পারি, তাহলে দেশে টাইফয়েডে মৃত্যুর ঘটনা কার্যত বন্ধ করা সম্ভব হবে। এ উদ্যোগ আমাদের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে।
আরও পড়ুন: দেশে প্রথমবারের মতো টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি শুরু
একই দিনে সামাজিক কল্যাণ ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন শুধু একটি স্বাস্থ্য প্রকল্প নয়, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। দীর্ঘদিন ধরে টাইফয়েড একটি নীরব বিপদ হিসেবে থেকে গেছে, বিশেষ করে নিম্নআয়ের পরিবারের শিশুদের জন্য। এবার সরকারের এই উদ্যোগ সেই দুর্বল জায়গায় বড় পরিবর্তন আনবে।
রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজে টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান এবং রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে উদ্বোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রম চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। রেজিস্ট্রেশন বা জন্মনিবন্ধন না থাকলেও শিশুরা কেন্দ্রে গিয়ে টিকা পাবে। টিকাটি তৈরি করেছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট, এবং সরকার এই টিকা পেয়েছে গ্যাভি আন্তর্জাতিক টিকা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে।
এ উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের শিশুদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং টাইফয়েডে মৃত্যুর হার কমানো সরকারের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি