দেশে প্রথমবারের মতো টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি শুরু

ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন রবিবার (১২ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এক মাসব্যাপী এই কর্মসূচির আওতায় ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় পাঁচ কোটি শিশু-কিশোর-কিশোরীকে বিনামূল্যে ইনজেকটেবল টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে।
সরকারের লক্ষ্য ৪ কোটি ৯০ লাখ শিশুকে টিকা দেওয়া। ইতোমধ্যে ১ কোটি ৬৮ লাখ শিশু নিবন্ধন করেছে এবং নিবন্ধন প্রক্রিয়া এখনো চালু রয়েছে। জন্মসনদ না থাকলেও নিকটস্থ টিকাকেন্দ্রে স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তায় নিবন্ধন করা যাবে। অভিভাবকেরা vaxepi.gov.bd/registration/tcv ওয়েবসাইটে গিয়ে ১৭ সংখ্যার জন্মনিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন এবং নিবন্ধনের পর সরাসরি ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করা যাবে।
ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) প্রোগ্রামের ম্যানেজার ডা. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খান জানিয়েছেন, ক্যাম্পেইনের প্রথম ১০ দিন (১২–২১ অক্টোবর) স্কুল ও মাদ্রাসায় ক্যাম্প করে টিকা দেওয়া হবে। এরপরের ৮ দিন (২২–৩০ অক্টোবর) ইপিআই সেন্টারে টিকাদান কার্যক্রম চলবে। প্রাক্-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্কুল ও মাদ্রাসায় টিকা পাবে। এরপর ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী অন্যান্য শিশুরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকা পাবে। শহরের পথশিশুদের টিকাদানের দায়িত্বে থাকবে বিভিন্ন এনজিও।
আরও পড়ুন: ‘জন্মসনদ থাকুক বা না থাকুক টিকা থেকে একটি শিশুও যেন বাদ না যায়’
শনিবার (১১ অক্টোবর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন আজ ১২ অক্টোবর স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা, আজিমপুর কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
এই টিকা তৈরি করেছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট এবং এটি সরকার পেয়েছে আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন সহায়তা সংস্থা গ্যাভির সহযোগিতায়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান জানিয়েছেন, টিকাটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ। ইতিমধ্যে নেপাল, পাকিস্তানসহ আটটি দেশে সফলভাবে ব্যবহার হয়েছে এবং কোনো দেশেই বড় ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আশা করছে, এই ক্যাম্পেইন সফল হলে টাইফয়েড প্রতিরোধে বাংলাদেশ একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করবে। দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত এ ব্যাধি থেকে শিশুদের সুরক্ষায় এটি হবে সরকারের একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি