News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:৫৩, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দেশে ৪ শিশুর শরীরে বার্ড ফ্লু শনাক্ত, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত

দেশে ৪ শিশুর শরীরে বার্ড ফ্লু শনাক্ত, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত

ছবি: সংগৃহীত

দেশে সম্প্রতি চারজন শিশুর শরীরে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত চার শিশুর বয়স এক থেকে আট বছরের মধ্যে। তবে চিকিৎসা নিয়ে তারা সবাই সুস্থ হয়ে উঠেছে। 

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন।

ডা. তাহমিনা শিরিন জানান, বাংলাদেশে প্রতিরোধ জোরদারে সরকার ইতিমধ্যে একটি গবেষণা কৌশল প্রণয়ন করেছে। এ বিষয়ে গত বুধবার আইসিডিডিআর,বি, সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার অংশীদারদের নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয় এবং দেশের জন্য জাতীয় গবেষণা কৌশল চূড়ান্ত করার বিষয়েও আলোচনা হয়।

সভায় বিশেষভাবে আলোচিত হয় সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ, ঝুঁকির কারণ চিহ্নিতকরণ, ভাইরাসের হোস্ট সম্পর্ক, প্রাণী ও মানুষের সংযোগ এবং টিকার কার্যকারিতা নিরীক্ষণের প্রয়োজনীয়তা। এছাড়া আরও শক্তিশালী পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার দাবি তুলেছে গবেষকরা।

আইসিডিডিআর,বির গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা ও গাজীপুরের লাইভ বার্ড মার্কেট বা জীবিত হাঁস-মুরগির বাজার থেকে সংগৃহীত বাতাসের নমুনার ৯১ শতাংশই এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা পজিটিভ। এসব বাজারকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০২৪-২০২৫ সালের মধ্যে এসব বাজারে পাওয়া মৃত মুরগির প্রায় অর্ধেকই এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার সাবটাইপ এইচফাইভে আক্রান্ত ছিল।

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৫৮, চলতি বছরে মৃত্যু ১৩০

বিশ্বব্যাপী ২০২৫ সালে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা কেবল নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার মতো মহাদেশেও সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী আটটি দেশে মোট ৩০ জনের শরীরে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪ জন কম্বোডিয়ায়, আর বাংলাদেশে চারজন শনাক্ত হয়েছে। উদ্বেগজনকভাবে, দেশে ২০০৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১২ জনের শরীরে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা শনাক্ত হলেও, ২০২৫ সালের প্রথম আট মাসেই চারজন শনাক্ত হয়েছে।

দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া মোট ১২ জনের মধ্যে সাত জনই ছিল পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু। এ বছর শনাক্ত চার শিশুই এক থেকে আট বছরের মধ্যে হওয়ায় শিশুদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিকে নির্দেশ করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, পোলট্রি খাতে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়ানোর প্রধান ঝুঁকির কারণ হলো সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থার বড় ধরনের ঘাটতি। এর মধ্যে অসুস্থ পাখিকে আলাদা না রাখা, বর্জ্য সঠিকভাবে নিষ্পত্তি না করা এবং পোলট্রি রাখার স্থানগুলিতে অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিধি অন্তর্ভুক্ত।

আইইডিসিআর এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থা আশা করছে, সম্প্রতি গৃহীত গবেষণা কৌশল ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের শিশু এবং জনগণকে এ রোগের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়