ঘুরপাক খাচ্ছে ফারুকী হত্যা তদন্ত
ঢাকা: থানা থেকে ডিবি সেখান থেকে সিআইডি এমন বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে এক বছর আগে নিজ বাসায় খুন হওয়া ইসলামী ফ্রন্ট্রের নেতা মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যাকাণ্ডের তদন্ত। সব শেষে সিআইডি হাতে ন্যাস্ত হওয়ার পরও কোন কুল কিনারা হয়নি আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের। এখনো জানা যায়নি, কারা, কী কারণে খুন করেছিলো বেসরকারি টেলিভিশনের ইসলামী অনুষ্ঠানের এ উপস্থাপককে।
গত বছরের ২৭ আগস্ট পূর্ব রাজাবাজারের ১৭৪ নম্বর বাড়িতে নৃশংসভাবে খুন হন ফারুকী। এ ঘটনায় শেরে বাংলানগর থানায় একটি ডাকাতি ও হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এ ছাড়া মাওলানা তারিক মনোয়ারসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করেন ইসলামী ফ্রন্টের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সেনা। শেরে বাংলানগর থানায় মামলাটি দায়েরের কয়েকদিন পরই অধিকতর তদন্তের জন্যে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) স্থানন্তর করা হয়। দীর্ঘ এক বছরের তদন্তে তেমন সাফল্য না পেয়ে ডিবি মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করেছে। কিন্তু তাতেও এখন পর্যন্ত তেমন কোন অগ্রগতি পাননি নিহতের পরিবার।
নিহতের ছেলে ফুয়াদ ফারুকী অভিযোগ করে বলেন, “মামলার তদন্তের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে আমাদের ধমক দেওয়া হয়। তারা বলেছিল কাউকে সন্দেহ হলে বা কোন তথ্য পেলে তাদের জানাতে। কিন্তু আমাদের সন্দেহ হয় এমন কাউকে ধরতে বললে তারা বলে আপনারা ধরেন।”
ফারুকীর বড় ছেলে আহমদ রেজা ফারুকীও অভিযোগ করে বলেন, “অন্য সকল মামলা দ্রুততার সাথে তদন্ত হচ্ছে কিন্তু আমাদেরটা হচ্ছে না কেন। যতদিনই লাগুক এটার যেন বিচার হয়। তবে আমরা সঠিক সময়ে সঠিক বিচার চাই।”
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগের এপ্লিকেশন সার্ভিসের কথোপকথন ট্র্যাকিং কিংবা অবস্থান ট্র্যাক করার কোনো প্রযুক্তি তাদের নেই। এ সকল মাধ্যমে যোগাযোগের কারণে গোয়েন্দারা তাদের গতিবিধি অনুসরণ করতে পারছে না। কল ট্র্যাকিং, ফেসবুক, ভাইবার, টুইটারের বার্তা নিয়ে তদন্তকাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টগুলোর অবস্থান নির্ণয়ের প্রযুক্তি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে নেই। আর সেই লক্ষে মামলটি অধিকতর তদন্তের জন্যে সিআইডিতে নেওয়া হচ্ছে।
ফারুকী হত্যাকাণ্ডের অগ্রগতি জানতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই জুলহাস উদ্দিন আকন্দের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে ডিবির অন্য এক কর্মকর্তা জানান, “মামলার তদন্তে উগ্রপন্থি কাউকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাই মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্যে সিআইডিতে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এখন শুধু অর্ডারের (আদেশ) অপেক্ষা।”
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৭ আগস্ট রাজধানীর ১৭৪ পূর্ব রাজাবাজারে সন্ধ্যায় নিজ বাসায় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং চ্যানেল আইয়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপস্থাপক শায়খ মাওলানা নূরুল ইসলাম ফারকীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। তিনি ইসলামিক মিডিয়া জনকল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যান ও ফারকী ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকও ছিলেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনএইচ/এজে
নিউজবাংলাদেশ.কম








