News Bangladesh

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:৫৬, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

গান ছেড়ে ভিক্ষার নির্দেশ, হুমকির মুখে অন্ধ হেলালের পুরো পরিবার

গান ছেড়ে ভিক্ষার নির্দেশ, হুমকির মুখে অন্ধ হেলালের পুরো পরিবার

হুমকির পর গত ৬ দিন ধরে বন্ধ হয়ে গেছে তাদের একমাত্র জীবিকার পথ। ছবি: সংগৃহীত

প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে গান গেয়ে পরিবার চালাচ্ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিল্পী হেলাল মিয়ার (৬৫)। শুধু তিনিই নয় তার ১৩ সদস্যের বড় পরিবারে নয়জনই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। কিন্তু একদল লোকের হুমকির পর গত ছয় দিন ধরে বন্ধ হয়ে গেছে তাদের একমাত্র জীবিকার পথ। ফলে পুরো পরিবার এখন  মারাত্নক সংকটে পড়েছে।

জন্ম থেকেই দৃষ্টিশক্তিহীন হেলাল মিয়া স্ত্রী, চার ছেলে, এক মেয়ে এবং তিন নাতি-নাতনি তাদের অধিকাংশেরই চোখে আলো নেই। কিন্তু তারা কখনো ভিক্ষা করেননি; বরং গানকে বেছে নিয়েছেন সম্মানের পেশা হিসেবে।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মুক্তমঞ্চের সামনে আধ্যাত্মিক গান পরিবেশন করেন তারা। মারফতি, মুর্শিদী, কাওয়ালী এসব গান শুনে দর্শনার্থীরা খুশি হয়ে যা দেন, তাই দিয়েই চলে তাদের বড় সংসার। সাধারণ দিনে আয় থাকে এক থেকে দেড় হাজার টাকা, বিশেষ অনুষ্ঠানে তা পাঁচ হাজার টাকাও ছাড়িয়ে যায়। এই আয়ের ওপর ভিত্তি করেই চলে তাদের চিকিৎসা, ওষুধ, খাবারসহ সব খরচ।

কিন্তু গত বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে গানের আসর চলাকালে কয়েকজন যুবক সেখানে এসে হেলাল মিয়াদের গান বন্ধ করে দিতে বলেন। তারা নির্দেশ দেন গান ছেড়ে ভিক্ষাবৃত্তি করতে। নাহলে বাদ্যযন্ত্র ভেঙে ফেলবেন তারা। সেই ভয়ে আর গান গাইতে বের হননি তিনি।

হেলাল মিয়ার আক্ষেপ করে বলেন, ছয় দিন হলো গান বন্ধ। আমাদের সংসার দিন এনে দিন খায়। এই কয়েক দিনে জমানো সামান্য টাকা আর কিছু ধার করে কোনোভাবে টিকে আছি। কিন্তু দীর্ঘদিন এমন চললে না খেয়ে থাকতে হবে।

তিনি আরও জানান, এর আগেও দু’বার তাদের একইভাবে বাধা দেওয়া হয়েছিল। তবে এবারের ঘটনাটি তাদের আতঙ্ক আরও বাড়িয়েছে।
কুড়িগ্রামে বিজিবির বিশেষ অভিযানে ৩২ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ

ঘটনা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। অন্ধ এই পরিবারটিকে আমি ব্যক্তিগতভাবেও সহায়তা করেছি। তাদের হুমকি দেওয়ার কথা শুনে কষ্ট পেয়েছি। আমি তাদের আবারও মুক্তমঞ্চে বসে গান গাইতে বলেছি।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ওবায়দুর রহমান জানান, এই পরিবারের প্রতি বাধা দেওয়ার কোনো অভিযোগ পুলিশের কাছে আসেনি। কেউ জানালে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়