News Bangladesh

খুলনা সংবাদদাতা || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৮:২৫, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫

খুলনায় সড়ক রক্ষায় এলজিইডির লোহার বার খুলে ফেলেছে বালি ব্যবসায়ীরা

খুলনায় সড়ক রক্ষায় এলজিইডির লোহার বার খুলে ফেলেছে বালি ব্যবসায়ীরা

লোহার বার খুলে নেওয়ার আগে ও পরে। ছবি: নিউজবাংলাদেশ

খুলনা আড়ংঘাটা থানার রাযেরমহল বাইপাস সড়ক হতে কৈয়াবাজার পর্যন্ত সড়কটি ভারি যানবাহন চলাচল করায় অল্পদিনের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। গেল বর্ষা মৌসুমে সড়কটি চলাচলের একবারেই অযোগ্য হয়ে পড়ে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর মাত্র কিছুদিন পূর্বে সড়কটিতে কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করে। ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধে সড়কটির বাইপাস প্রান্ত ও কৈয়া বাজার প্রান্তে ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি লোহার বার স্থাপন করে। কিন্তু একশ্রেণির দুষ্কৃতিকারী রায়ের মহল বাইপাস প্রান্তের বারটি খুলে ফেলে। এতে সড়কটির স্থায়ীত্ব আবারও ঝুঁকিতে পড়েছে।

খুলনা এলজিইডি’র সদ্য সংস্কার করা বাইপাস সড়কের রায়ের মহল মোড় থেকে কৈয়া বাজার অভিমুখে ৬ কিলোমিটার সড়কটি দুই উপজেলা ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটার সীমান্ত রয়েছে। বাইপাস মোড় থেকে রাজবাঁধ কালভার্ট পর্যন্ত ডুমুরিয়া উপজেলার অংশে ৩.৮ কিলোমিটার। সেখান থেকে কৈয়া বাজার পর্যন্ত বটিয়াঘাটা উপজেলার অংশে ২.১ কিলোমিটার।

২০২২-২৩ অর্থ বছরে “ঘুর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন” প্রকল্পের আওতায় মোস্তফার মোড় থেকে ৩.২ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়ক নির্মাণে চুক্তি মূল্য ৭ কোটি ৩৭ লাখ ৫৯ হাজার ৮০৬ টাকা। সড়কটি এলজিইডির কাছে হস্তান্তরের পূর্বেই ক্ষতিগ্রস্ত হলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়কটি সংস্কার করে। সড়কটিতে যাতে ভারী যানবাহন বিশেষ করে ১২ ফুট উচ্চতার ১০ চাকার  মাটি ও বালিবাহি ট্রাক চলতে না পারে এজন্য ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুই প্রান্তে সাড়ে ৭ ফুট উচ্চতার মজবুত লোহার বার দেয়া হয়। কিন্তু বাইপাস প্রান্তের উপরের বারটি দুষ্কৃতিকারিরা খুলে গায়েব করে দেয়। 

অপরদিকে কৈয়াবাজার প্রান্তের বারটি রয়েছে। ফলে কৈয়া থেকে কোন ভারী ট্রাক যেতে পারে না। কিন্তু বাইপাস প্রান্ত থেকে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক বালি নিয়ে পূর্ব বিল পাবলা মাদ্রাসার নিকট ফেলে স্থায়ী বালি পার্পিং স্পট তৈরি করেছে। সেখানে বালি ফেলে কয়েক কিলোমিটার পাইপের মাধ্যমে পার্পিং করে অবৈধ প্লট ব্যবসায়ীরা কৃষি জমি ও জলাশয় ভরাট করছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ দারুল হুদা জানান, কাপেটিং উঠে বেশ কয়েক জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হলে সেটি মেরামত করা হয়েছে। সদ্য মেরামত হওয়া সড়কটি রক্ষায় সড়কের দুপ্রান্তে বার স্থাপন করা হয়। কিন্তু প্লট ব্যবসায়ীরা বাইপাস প্রান্তের বারটি খুলে ফেলেছে। 

হাওর ও নদীর মাছ বাজারে উঠতেই উধাও

তিনি বলেন, সড়কটি ১৫ টন ওজনের মালবাহি যানবাহনের ভার সহ্য করতে পারে। সেখানে মাটি-বালিবাহি ১০ চাকার ট্রাকে ৫০ থেকে ৬০ টন পন্য পরিবহন করছে। এতে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

এলজিইডি খুলনার নির্বাহি প্রকৌশলী কামরুল ইসরাম সরদার জানান, আমরা সড়ক রক্ষায় দুই প্রান্তে লোহার বার স্থাপন করেছিলাম কিন্তু প্রভাবশালী জমি ব্যবসায়ীরা সেটি খুলে ফেলেছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার ( ভূমি) ও নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার বিশ্বাস জানান, সড়ক রক্ষায় এলজিইডির পক্ষ থেকে দুই প্রান্তে বার স্থাপন করতে গেলে বাধার সম্মুখিন হই। পরে স্থাপন করা হলেও সেটি আর সেখানে নেই। তিনি বলেন, বালি দিয়ে কৃষি জমি ও জলাশয় ভরাট করা বেআইনি। এসব কাজে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়