আন্দোলনের কারণে পড়াশোনার ক্ষতি হলে কঠোর ব্যবস্থা: শিক্ষা উপদেষ্টা
ছবি: সংগৃহীত
শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে পড়াশোনার ক্ষতি হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
উপদেষ্টা বলেছেন, ‘ওনারা যেহেতু স্বাধীন দেশের নাগরিক, ওনাদের কথা বলার সুযোগ আছে। ওনারা আন্দোলন করতে পারেন। কিন্তু আমরা যেটা দেখব, আমাদের পড়াশোনা যাতে বিঘ্নিত না হয়। এই ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা নেব, যদি আমাদের পড়াশোনা বিঘ্নিত হয়।’
শনিবার দুপুরে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট অংশীজনের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ‘সহকারী শিক্ষকেরা ১৩তম গ্রেড থেকে এক লাফ দিয়ে দশম গ্রেডে যাবেন, যেখানে মাত্র প্রধান শিক্ষকেরা দশম গ্রেড পেয়েছেন, এটা যুক্তিসংগত কি না, আপনারাই বিবেচনা করে দেখেন। আমি যতটুকু জানি, সহকারী শিক্ষকদের এই দাবিটা যুক্তিসংগত না।’
তিনি বলেন, ‘সহকারী শিক্ষকেরা যাতে ১১তম গ্রেড পেতে পারেন, সে জন্য আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ে লিখেছি, বেতন কমিশনে লিখেছি। বেতন কমিশন ছাড়াও অন্যান্য নীতিনির্ধারক যারা রয়েছেন, তাদের সঙ্গে আমি লবিং করছি যে ১১তম গ্রেড যেন বাস্তবায়ন করা হয়। আমি কতটুকু পারব নিশ্চিত না। তবে আমি লেগে আছি। ফলে দশম গ্রেডের দাবি তুলে এই মুহূর্তে আন্দোলনে যাওয়া আমার কাছে খুব যৌক্তিক মনে হয় না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তিন দফা দাবি দেখেছি। প্রথমটা দশম গ্রেড, পরেরটা ১০ ও ১৬ বছরে সিলেকশন গ্রেড, তিন নম্বরটা শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি। আমরা পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রস্তাব করেছিলাম শতভাগ। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলেছে, সরকারের নীতি হচ্ছে এসব ক্ষেত্রে শতভাগ না দিয়ে সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ দেওয়া, ২০ শতাংশ আমাদের রাখতে হবে নতুন নিয়োগের জন্য। ফলে ওনাদের পরামর্শ মোতাবেক সেটা করা হয়েছে। ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে যে টাইম স্কেল, সেটা বেতন কমিশন দেখবে, এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। দশম গ্রেড প্রসঙ্গে যেটা আসছে, প্রাথমিক শিক্ষকদের একটা অংশ এই দাবিটা করে, বেশির ভাগ শিক্ষক মনে করেন, এই দাবিটা মোটেই যৌক্তিক না।’
আরও পড়ুন: জানুয়ারি ২০২৬ থেকে কার্যকর নতুন সরকারি বেতন কাঠামো
দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের প্রধান শিক্ষকেরা ১২ ও ১১ গ্রেডে বেতন পেতেন। বর্তমান সরকার তাদের দশম গ্রেডে উন্নীত করেছে। প্রাথমিক শিক্ষকদের সংখ্যা অনেক বেশি। বড় আর্থিক সংশ্লেষ আছে এখানে। সরকার মনে করেছে প্রধান শিক্ষকদের দাবিটা যুক্তিসংগত ছিল। এ জন্য প্রধান শিক্ষকের দাবিটা আমরা বাস্তবায়ন করেছি।’
ওবলেন, ‘ওনারা যেহেতু স্বাধীন দেশের নাগরিক, ওনাদের কথা বলার সুযোগ আছে। ওনারা আন্দোলন করতে পারেন। কিন্তু আমরা যেটা দেখব, আমাদের পড়াশোনা যাতে বিঘ্নিত না হয়। এই ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা নেব, যদি আমাদের পড়াশোনা বিঘ্নিত হয়। আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়াশোনার মানের উন্নয়নের বিষয়টাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। এই পর্যায়ে এসে যদি অযৌক্তিক দাবি দিয়ে কেউ পড়াশোনাকে বিঘ্নিত করে, সে জন্য আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
তিনি বলেন, আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়াশোনার মানের উন্নয়নের বিষয়টাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। এই পর্যায়ে এসে যদি অযৌক্তিক দাবি দিয়ে কেউ পড়াশোনাকে বিঘ্নিত করে, সে জন্য আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মিরাজুল ইসলাম উকিল ও খুলনার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান। খুলনা বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফিরোজ শাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন খুলনা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম, বাগেরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরীন আকতার ও সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোজাফফর উদ্দীন। খুলনা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ এ সভার আয়োজন করে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি








