News Bangladesh

সখীপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:০০, ২২ অক্টোবর ২০২৫

সখীপুরে শিক্ষক ১২ জন, পরীক্ষার্থী ১১ জন, পাশ করেছে মাত্র ১ জন

সখীপুরে শিক্ষক ১২ জন, পরীক্ষার্থী ১১ জন, পাশ করেছে মাত্র ১ জন

ছবি: নিউজবাংলাদেশ

পুরো কলেজে পাশ করেছে মাত্র একজন শিক্ষার্থী। ওই কলেজে শিক্ষকের সংখ্যা ১২ জন, পরীক্ষার্থী ১১ জন, কিন্তু পাশ করেছে মাত্র একজন। শুধু তাই নয় এবার একাদশ শ্রেণিতে একজন শিক্ষার্থীও ভর্তি হয়নি। ভর্তির জন্য কেউ চেষ্টাও করেনি। দ্বাদশ শ্রেণিতে ১৭ জন শিক্ষার্থী থাকলেও, তারা গত এক বছরে একটি ক্লাসও পায়নি। এ নিয়ে পুরো উপজেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। 

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার সূর্য তরুণ স্কুল অ্যান্ড কলেজে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে অংশ নেয় ১১ জন শিক্ষার্থী। কিন্তু, তাদের মধ্যে পাশ করেছে মাত্র একজন শিক্ষার্থী। ভাগ্যবান শিক্ষার্থীর নাম সাইদুর রহমান ইমন। অথচ ওই কলেজে ১১ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে বিজ্ঞান বিভাগে ৪ জন, ব্যবসায় বিভাগে ৩ জন, এবং মানবিক ৫জনসহ মোট ১২ জন কাগজে কলমে শিক্ষকতা করেন। কিন্তু তারা কেউ কলেজে আসেন না।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সারা দেশে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ফলফল ঘেটে দেখা যায়, উপজেলার ৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করেছে সূর্য তরুণ স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দুই বছর ধরে কলেজ সেকশনে ক্লাস হয় না বলে, শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কেউ আসে না। অধিকাংশ শিক্ষক মাসের পর মাস কলেজে অনুপস্থিত থাকেন। ক্লাস না হওয়ায় শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনায় অনাগ্রহী হয়ে পড়ে। ফলস্বরূপ এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় কলেজটির ফলাফল হয়েছে মাত্র ৯.০৯ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৪ সালে স্কুল থেকে কলেজে উন্নীত হয়। এক বছর ধরে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন গভর্নিংবডি নেই। ১৫ বছর ধরে অধ্যক্ষ নেই। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে নামে মাত্র চলছে কলেজের কার্যক্রম। নিয়মিত ক্লাস হবে এমন শর্তে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হলেও শিক্ষার্থীরা কখনো শিক্ষকের দেখা পায়নি। কারণ কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষার কোনো খোঁজ খবর নেয় না। শিক্ষার্থী কিংবা শিক্ষক ঠিকমতো ক্লাসে আসছে কিনা, এর তদারকিও কেউ করে না।

শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান ইমন বলেন, কলেজে কোন ক্লাসই নিয়মিত হয়না। শিক্ষকরা কলেজে আসেন না। আর এবছর ১১ জনের মধ্যে শুধু একজন পাশ করলেও, তিনি মনে করেন নিয়মিত ক্লাস হলে ফলাফল আরো ভাল হতো।

সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের প্রভাষক ইকবাল গফুর বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, ম্যাজিস্ট্রেট, ইউএনও, ডিসি, এসপি হয়েছেন। এটা সখীপুরের মধ্যে একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অথচ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুধু কলেজ করার কারণে আজ ধ্বংসের পথে।

এ বিষয়ে একাধিকবার বক্তব্য নিতে গেলেও কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।

আরও পড়ুন: টেকনাফে মানবপাচার চক্রের আস্তানায় বিজিবির অভিযান, ৬ জিম্মি উদ্ধার

ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটি অবহেলায় অযত্নে তিলে তিলে আজ ধ্বংস হওয়ার পথে। সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সাবেক শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। স্থানীয়দের দাবি শিক্ষার মান ঠিক রেখে এগিয়ে যাবে প্রতিষ্ঠানটি। 

নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়