News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৬:৩৮, ২২ অক্টোবর ২০২৫

৫ দাবিতে থালা-বাটি হাতে শাহবাগে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের লং মার্চ

৫ দাবিতে থালা-বাটি হাতে শাহবাগে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের লং মার্চ

ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা বৃদ্ধি, বিশেষ নিয়োগের ব্যবস্থা ও স্বতন্ত্র কোটা পুনর্বহালসহ পাঁচ দফা দাবিতে থালা-বাটি হাতে যমুনা অভিমুখে লং মার্চ শুরু করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে চাকরি প্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্রাজুয়েট পরিষদ-এর ব্যানারে এই লং মার্চ শুরু হয়। 

‘কাজ চাই, অধিকার চাই’— এমন স্লোগানে মুখর হয়ে যাত্রা শুরুর পরপরই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে মিছিলটি থামিয়ে দেয়।

পুলিশি বাধার মুখে বিক্ষোভকারীরা শাহবাগ থানার সামনে বসে পড়েন এবং সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ওই এলাকায় যান চলাচলে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ তাদের জাতীয় জাদুঘরের সামনে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, তবে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান বজায় রাখেন।

প্রতিবাদী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা বলেন, আমরা শিক্ষিত, যোগ্য ও কর্মক্ষম হয়েও বছরের পর বছর কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। ২০১৮ সাল থেকে ন্যায্য অধিকার আদায়ের দাবিতে আন্দোলন করে আসলেও কোনো বাস্তব অগ্রগতি হয়নি।

তাদের অভিযোগ, কর্মসংস্থানে অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী কোটা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ায় হাজার হাজার শিক্ষিত প্রতিবন্ধী এখনও চাকরির সুযোগ পাচ্ছেন না।

আরও পড়ুন: ভুখা মিছিল করতে না পেরে শহীদ মিনারে ফিরে গেলেন শিক্ষকরা

চাকরি প্রত্যাশী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো—

১. প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী বেকার, শিক্ষিত প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশে বিশেষ নিয়োগ ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
২. প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২ শতাংশ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৫ শতাংশ স্বতন্ত্র প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. দৃষ্টি বা শারীরিক প্রতিবন্ধীরা নিজেদের পছন্দমতো শ্রুতি লেখক (বিকল্প সহকারী) মনোনয়নের স্বাধীনতা পাবেন— এমনভাবে নীতিমালা হালনাগাদ করতে হবে।
৪. সমাজসেবা অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট পদসংখ্যায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নিয়োগ দিতে হবে।
৫. প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করতে হবে; আর সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩৫ হলে তা ৩৭ বছর করতে হবে।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত না করলে কোনো উন্নয়নই টেকসই হতে পারে না। আমরা রাষ্ট্রের অংশ, দয়া নয়— অধিকার চাই।

তারা আরও জানান, সরকার বারবার আশ্বাস দিলেও প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত কোটা বা নিয়োগের প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নেই। অনেক ক্ষেত্রেই যোগ্য প্রার্থীরা কোটার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন।

শাহবাগ থানার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিক্ষোভকারীরা লং মার্চের নামে প্রধান সড়ক দখল করেছিলেন। জনদুর্ভোগ এড়াতে আমরা তাদের শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সরিয়ে দিই।

২০১৮ সাল থেকে প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রত্যাশীরা কোটা পুনর্বহাল, বয়সসীমা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে রাজধানীতে একাধিক কর্মসূচি পালন করে আসছেন। তবে তাদের দাবি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।

তারা জানান, এবার তাদের আন্দোলন হবে “দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত টানা।”

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়