চুরি ও মলত্যাগের অভিযোগ তিন শিশুকে নির্যাতন
লক্ষ্মীপুর: দশ টাকা চুরি ও পুকুরে মলত্যাগের অভিযোগে পৃথক দুই ঘটনায় তিন শিশুকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। টাকা চুরির দায়ে নিজের দুই সন্তানের হাত জ্বলন্ত গ্যাসের চুলায় পুড়িয়ে দিয়েছে পিতা। আরেক স্থানে পুকুরে মলত্যাগের দায়ে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে এক শিশুর।
দুই শিশুর হাত পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে পিতা নূর মোহাম্মদ খলিলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় দুই শিশুকেও উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার দুপুরে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় সাবরিনা সুলতানা (৭) ও নুজহাত তাবাসসুম (৫) নামের দুই শিশুকে নিয়ে খলিল জেলার ঝুমুরের আধুনিক হাসপাতালে এলে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করে সদর থানা পুলিশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার ধোলাকান্দি গ্রামের বুড়া মৌলভীবাড়ীতে এ দুই শিশুকে নির্যাতন করা হয়।
এলাকাবাসী ও দুই শিশু নিউজবাংলাদেশ জানায়, দশ টাকা চুরির দায়ে পিতা নূর মোহাম্মদ খলিল দুই শিশুর বাম হাত ঘরের সিলিন্ডার গ্যাসের জ্বলন্ত চুলায় পুড়িয়ে দেন। তাৎক্ষণিকভাবে তারা জ্ঞান হারিয়ে ফেললে রাতেই তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করে খলিল পালিয়ে যান। এদিকে স্থানীয়রা ঘটনা জানতে পেরে তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। তাকে না পেয়ে এ ঘটনার জন্য তার শাস্তি দাবি করে বিক্ষোভ করে।
জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) নাসিম মিয়া নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “আটককৃত খলিলের বিরুদ্ধে মামলাসহ যথাযথ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় পুকুরে মলত্যাগ করার অভিযোগে মো. শিপন (৯) নামের এক শিশুকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। জানা গেছে, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে শিশুর চাচা মো. হাসান বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে কমলনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মামলার প্রধান আসামি মো. দিদার হোসেনকে (২১) গ্রেফতার করে।
নির্যাতিত শিশু শিপন উপজেলার সাহেবেরহাট ইউনিয়নের চর জগবন্ধু গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। গ্রেফতার হওয়া দিদার একই গ্রামের মৃত বশির উল্লাহর ছেলে।
পুলিশ ও শিশুর চাচা মো. হাসান নিউজবাংলাদেশকে জানান ২৭ জুলাই বিকেলে শিপনের বিরুদ্ধে পুকুরে মলত্যাগ করার মিথ্যা অভিযোগ আনে দিদার। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে দিদার ও তার ভাইসহ চারজন ইট দিয়ে শিপনের মাথায় আঘাত করে থেঁতলে দেয়।
সূত্র আরো জানায়, পরে স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কপপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি দেখে চিকিসকদের পরামর্শে তাকে নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে পরদিন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির আহাম্মদ নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “এ ঘটনা থানায় মামলা হয়েছে। অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।”
লক্ষ্মীপুরের সহকারী পুলিশ (সদর) মো. জুনায়েত কাউসার নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “শিশু নির্যাতনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত চলছে। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/এটিএস
নিউজবাংলাদেশ.কম








