News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৬:১৭, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

ভারত রাজি না হলে শেখ হাসিনাকে ফেরানো সম্ভব নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ভারত রাজি না হলে শেখ হাসিনাকে ফেরানো সম্ভব নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে থেকে তৃতীয় কোনো দেশে যাচ্ছেন-এমন তথ্য কূটনৈতিক চ্যানেলে বাংলাদেশের কাছে নেই বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। 

তিনি বলেন, এটার বিষয়ে বাংলাদেশের কিছু করার নাই। আমরা চাই উনি ফেরত আসুক। শুনেছি আপনারা যে রকম বলছেন।

বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

তৌহিদ হোসেন আরও জানিয়েছেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানো নিয়ে সবকিছু মূলত ভারতকে রাজি করানো বা ভারতের অনুরোধের ওপর নির্ভরশীল। 

তিনি বলেন, ভারতকে রাজী হতে হবে অথবা চাইতে হবে তাকে ফেরত পাঠাতে। আমরা রাজী করানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারব - এইটুকুই। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না। 

সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ এবং রাজি করানোর প্রচেষ্টা চলতে পারে। তবে ভারতের সম্মতি ছাড়া কার্যকর প্রত্যর্পণ সম্ভব নয় বলে তিনি স্পষ্ট করেছেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তার বক্তব্যে স্মরণ করিয়ে দেন যে, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা ভারতে গেছেন; সেখানে তিনি অবস্থান করছেন। এরপর আন্দোলন দমনকালীন হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত মাসে তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছে। ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর বাংলাদেশ সরকার প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় ভারতের দিকে কূটনৈতিক পত্র পাঠানো হয়েছে-এটি ইতোমধ্যে ক্রমিক কূটনীতিকাল পদক্ষেপের অংশ বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: নির্বাচন পাঁচ বছরের জন্য আর গণভোট শত বছরের জন্য: প্রধান উপদেষ্টা

তৌহিদ হোসেন ভিসাসংক্রান্ত ইস্যু ও ভুয়া কাগজপত্র প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ফেক ডকুমেন্ট তৈরি বন্ধ না হলে বাংলাদেশের ভিসাসংক্রান্ত সমস্যা সমাধান হবে না। 

তিনি উল্লেখ করেন, শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদানের নীতিনির্ধারণ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর স্বার্থঅনুসারে পরিচালিত হয়; সেই সাথে নতুন কোনো দেশে বাংলাদেশের মিশন খোলা দীর্ঘ এবং সময়সাপেক্ষ-আর অর্থনৈতিক কারণের জন্য অনুমোদিত অনেকগুলো মিশন বাস্তবে চালু করা সম্ভব হয়নি।

প্রতিবেদনে তিনি ডিজিএফআই (ডিজিএফআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠান)-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে জানান, এ ধরনের প্রতিষ্ঠান নানা দেশে বিদ্যমান এবং এগুলো বন্ধ করা সহজ নয়। মানবাধিকার ইস্যুতে বিদেশি কোনো নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন এবং র‌্যাবের সম্প্রতি পারফরম্যান্সকে উল্লেখ করে বলেন, র‌্যাব কয়েক মাসে যথেষ্ট উন্নতি করেছে এবং মানবাধিকার রক্ষায় সরকার শতভাগ চেষ্টা করছে।

শান্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা, প্রত্যর্পণ ও কূটনৈতিক আলোচনা সংক্রান্ত প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা পুনরায় জোর দিয়েছেন যে, বাংলাদেশ চাইলে দরকার হলে ভারতকে রাজি করানোর চেষ্টা চালানো হবে; কিন্তু ভারত যদি সম্মতি না জানায় তবে দেশের সক্ষমতা সীমিত। তিনি আরও যোগ করেছেন যে, ভারতের পক্ষে প্রত্যর্পণের জন্য অনুরোধ করা হলে সেটি কার্যকর করতে ভারতকে অভ্যন্তরীণভাবে রাজি হতে হবে—এই দিক থেকে ঢাকা-নয়াদিল্লির কূটনৈতিক দ্বার খোলা রেখেই কাজ চলছে।

একই প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন কোনো জোট (ভারতকে বাদ দিয়ে পাকিস্তান ও চীনকে নিয়ে) গঠনের সম্ভাব্যতাকে ভবিষ্যৎনির্ভর হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, কোনো একদিন এর অগ্রগতি ঘটতে পারে, তবে এখন এ বিষয়ে বেশি কিছু বলার অবস্থায় নেই।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়